তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি :
বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের পথিকৃৎ শহীদ মীর নিসার আলি তিতুমীরের ১৯২তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) সরকারি তিতুমীর কলেজের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শহীদ তিতুমীরের স্মৃতিচারণ নিয়ে আলোচনা করেন অথিতিবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, শহিদ তিতুমীর ভারতীয় উপমহাদেশের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।যেখানে তিনি সব সময় বাঙালী জাতির পক্ষে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। শহীদ তিতুমীর ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ১৮৩১ সালের অক্টোবর মাসে নারকেলবাড়িয়ায় এক দুর্ভেদ্য বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন। তিনি ব্রিটিশ শাসন ও তাদের অনুগত অত্যাচারী হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং তার বিখ্যাত বাঁশের কেল্লার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। এই কেল্লা তিনি প্রচলিত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করেন। কৃষক-প্রজাদের নিয়ে প্রচলিত ও সনাতন অস্ত্রে সজ্জিত এই বাহিনীকে সামরিক কায়দায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এই বিরাট বাহিনী স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও সংগ্রামী চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে তিতুমীরের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা স্থাপন করে।
এ সময় দোয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে শহীদ তিতুমীরের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তাওসিফ মাইমুনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন ও কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোঃ কাজী ফয়জুর রহমানসহ সতিকসাসেসের সাধারণ সম্পাদক শাহদাত হোসেন নিশাদ, দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রসিদ ও কার্যনির্বাহী সদস্য আজাদ হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য,১৮৩১ সালের ১৪ নভেম্বর ইংরেজ বাহিনী বাশের কেল্লার উপর আক্রমণ চালায়। কামান ও আধুনিক অস্ত্র সজ্জিত ইংরেজ বাহিনীকে তিতুমীর তার স্থানীয় অস্ত্র দিয়ে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়ে বাঁশের কেল্লায় আশ্রয় নেয়। ইংরেজরা কামানে গোলাবর্ষণ করে কেল্লা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে দেয়। তিতুমীরের বিপুল সংখ্যক সৈনিক প্রাণ হারায়।
তিনি ছিলেন কুরআনে হাফেজ, বাংলা, আরবি ও ফার্সি ভাষায় দক্ষ এবং আরবি ও ফার্সি সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগী। তিনি ইসলামি ধর্মশাস্ত্র, আইনশাস্ত্র, দর্শন, তাসাওয়াফ ও মানতিক বিষয়ে সুপন্ডিত ছিলেন। মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে তিতুমীর একজন দক্ষ কুস্তিগীর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯ নভেম্বর ব্রিটিশ সৈন্যদের কাছে এই মহান নেতাসহ (তিতুমীর) তার চল্লিশ জন সহচর শহীদ হন।
এমআই