আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় যুদ্ধবিরতি চলাকালীন বাড়ি ফেরার চেষ্টারত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলিরা। মিডল ইস্ট আই এ খবর দিয়েছে।
গণমাধ্যমটির প্রতিনিধি মাহা হুসাইনি এখনও গাজায় অবস্থান করছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের চার দিনের যুদ্ধবিরতি চলাকালীন তাদের নিজেদের এলাকা ও ঘরে ফিরে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য গুলি চালাচ্ছে।
মাহা হুসাইনি বলেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার প্রায় আড়াই ঘন্টা পরে - ইসরায়েলি বাহিনী মধ্য গাজার মাগাজির পূর্বে গুলি চালায়। সেখানে ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিল।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে আছি। আমি এখানকার পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি মেশিনগানের গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
এর আগে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
তিনি আরও বলেছেন, শুক্রবার বিকেল ৪টায় বন্দীদের প্রথম দলটিকে মুক্তি দেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হবে চার দিন।
মাজেদ আল-আনসারি বলেন, প্রথম দিন ১৩ জন বন্দী মুক্তি পেতে পারে। আগামীকাল যেসব বন্দী মুক্তি পাবে তাদের তালিকা বিনিময় করা হয়েছে। প্রতিদিন নতুন করে বন্দীদের তালিকা বিনিময় করা হবে।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো বন্দীদের নিরাপত্তা। আমাদের লক্ষ্য থাকবে তারা নিরাপদে সেখানে পৌঁছাতে পারবে। বন্দীদের গাজা থেকে মুক্তির বিষয়টিতে যুক্ত থাকবে রেডক্রস ও যুদ্ধের অন্য পক্ষগুলো।’
দোহায় একটি সংবাদ সম্মেলনের সময় কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারির কাছ থেকে আরও জানা গেছে, “যেসব জিম্মি একই পরিবারের, তাদের ফেরত পাঠানোর সময় একসাথে রাখা হবে।
প্রতিদিন বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হবে। চার দিনের মধ্যে মোট ৫০ জনকে মুক্ত করা হবে।
গতকাল ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ৩০০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চার দিনের যুদ্ধবিরতির সময় এই তালিকার ১৫০ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
এর আগে বলা হয়েছিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। বুধবার হামাসের সিনিয়র নেতা মূসা আবু মারজুক বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বন্দী বিনিময় চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হবে। মারজুকের ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। এরপর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি এক দিন পিছিয়ে যাওয়ার দাবি করে।
এর আগে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে - তারা সবাই নারী ও শিশু।
যুদ্ধবিরতি চার দিনেরও বেশি সময় ধরে চলতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম ৫০ জনকে মুক্তি দেওয়ার পর প্রতি ১০জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হলে একটি অতিরিক্ত দিন যুদ্ধবিরতি থাকবে বা যুদ্ধবিরতি এক দিন বাড়ানো হবে ।
সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, মিডল ইস্ট আই
এমআই