শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

পরীক্ষার দাবিতে ফটক অবরোধ করলেন ইবি শিক্ষার্থীরা

শনিবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৩
পরীক্ষার দাবিতে ফটক অবরোধ করলেন ইবি শিক্ষার্থীরা

সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:

চতুর্থ বর্ষের ২য় সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। 

শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ২টায় দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে দুপুরের সিডিউলের কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ গামী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের বাসগুলো আটকে পড়ে। পরে বিভাগের শিক্ষকদের আশ্বাসে প্রায় আধাঘন্টা পর অবরোধ ছেড়ে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে দাবি আদায়ে বেলা সাড়ে ১২টায় বিভাগের অফিস কক্ষে তালা দিয়ে অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেখানে কোনো সমাধান না হলে পরবর্তীতে তারা প্রধান ফটক অবরোধ করেন। এসময় আন্দোলন চলাকালীন সমর্থন জানিয়ে বিভাগটির অন্য শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশ নেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, দুইমাস আগে বিভাগটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সম্মান চতুর্থ বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হয় এবং বিভাগ থেকে পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করা হয়। রুটিন অনুযায়ী গত ৩১ অক্টোবর তাদের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। এদিকে চতুর্থ বর্ষে এসে নম্বরপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে উক্ত শিক্ষাবর্ষের ৭জন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে নন ক্রেডিট কোর্সে উত্তীর্ণ হতে পারেনি বলে জানা যায়।  নিয়মানুযায়ী নন ক্রেডিট কোর্সের পরীক্ষা দ্বিতীয় বর্ষের মধ্যেই শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর অনুত্তীর্ণদের তালিকা বিভাগ এতোদিন প্রকাশ করেনি। ফলে নন-ক্রেডিট কোর্সে ফেল আসা শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসতে পারছেন না। এতে আটকে আছে চূড়ান্ত পরীক্ষাও।

বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা হলে ফেল করা শিক্ষার্থীদের নন-ক্রেডিট কোর্সটির পরীক্ষা নিতে উপাচার্যের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে বলে জানানো হয়। অনুমতি নিতে প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দেড় মাসেও বিভাগ এর সমাধান দিতে পারেনি।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের নন-ক্রেডিট কোর্সে সাত জন শিক্ষার্থীর কোর্সে ফেল করে। কিন্তু আমাদের বিভাগ থেকে এতোদিন বিষয়টা আমাদেরকে জানানো হয়নি। আমাদের চতুর্থ বর্ষের ২য় সেমিস্টার পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ হয়ে গেছে এমন সময়ে এসে আমরা তা জানতে পারি। এখন স্যারদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম যে এর জন্য নাকি উপাচার্যের বিশেষ অনুমতি লাগবে। অনুমতি নেওয়ার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল কিছু করেছি। কিন্তু দেড় মাসেও আমাদের বিভাগ বিষয়টির সমাধান করতে পারেনি। বিভাগের সকল স্যারদের পিছনে এতোদিন ঘুরেও আমরা কোনো সমাধান পাইনি। সর্বশেষ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে বলা হয় উপাচার্য স্যার নাকি বলেছেন যে উপ-উপাচার্যের সাথে বিষয়টি সুরাহা করে উপ-উপাচার্য সহ বিভাগের সভাপতিকে উপাচার্যের সাথে দেখা করার জন্য। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান স্যারের সাথে কথা বললেও তিনি কোনো সমাধান দেননি। উনি আজকে বিষয়টি দেখবে বলে সকালে দেখা করতে বলেছিলে। কিন্তু এসে শুনলাম উনি নাকি তার সভাপতির দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। এখন তিনি এ বিষয়ে নাকি কিছুই জানেন না।’

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের আন্তঃকোন্দলের কারণে আমরা শিক্ষার্থীরাই বলির পাঠা। নন-ক্রেডিট কোর্সে শিক্ষার্থীরা ফেল করার পর বিভাগ থেকে জানানো হয়নি। এটাতো আর আমাদের  দোষ না, এটা বিভাগের সমস্যা। কিন্তু স্যাররা এটা নিয়ে সব দায়িত্ব আমাদের উপর দিয়ে তারা চুপ করে বসে আছেন। সামনে শীতের বন্ধ, এরপর নির্বাচন। ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের পরীক্ষা না হলে আগামী চার পাঁচ মাসেও আর পরীক্ষাটা হবে না। সামনে বিসিএস এর সার্কুলার দেবে। এখন পরীক্ষা শেষ করতে না পারলে আমারা সেখানে আবেদন করা সম্ভব হবে না।’

আন্দোলন স্থগিতের বিষয়ে তারা বলেন, ‘আমাদেরকে জানানো হয়েছে যে স্যাররা আগামীকাল বসবে এবং একটা সিদ্ধান্ত জানাবে। তাই আমরা আজকে আমাদের আন্দোলন স্থগিত করছি। কিন্তু কালকের মধ্যে যদি বিষয়টি সমাধান না হয় তাহলে আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে আবার আন্দোলনে ফিরে যাবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘যেহেতু এটা বিভাগের বিষয়, বিভাগই সমস্যার সমাধান করবে। এটা নিয়ে গেইটে অবরোধ করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে এবং বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। তারা আগামীকাল বসে এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসবে। 

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিলো। আমি ছুটিতে ছিলাম। ছুটি শেষে এসে দেখি পরীক্ষা হয়নি। আশাকরি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 

এদিকে, আজ শনিবার সকালে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ সকালে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। বিভাগের শিক্ষকরা আমাকে বিষয়টি আরেকবার ভেবে দেখার জন্য বলেছেন। পরবর্তীতে কি করা যায় তা ভেবে দেখবো।’

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, ২৮ নভেম্বরের মধ্যে নন ক্রেডিট পরীক্ষা নিতে হবে, এই মাসের মধ্যে চতুর্থ বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু করতে হবে, শীতের ছুটির আগে ভাইবা শেষ করতে হবে, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করতে হবে এবং পরীক্ষার রেজাল্ট মার্কশিটসহ প্রকাশ করতে হবে। 

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল