লাবিন রহমান:
গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। দিনের বেলায় কিছুটা গরম লাগলেও, সন্ধ্যা নামার পরপর কুয়াশা জড়িয়ে ধরছে প্রকৃতিকে। এভাবেই ধীর ধীরে এগিয়ে আসছে শীত। আর তাই শীত মোকাবিলায় লেপ বা কম্বল কেনার কথা ভাবছেন অনেকেই।
সারা বছর তেমন একটা চাহিদা না থাকলেও শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে চাহিদা বাড়ায় লেপ-তোশকের কারিগরদের ব্যস্ত সময় শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে লেপ-তোশকের বিকল্প হিসেবে ক্রেতাদের আধুনিক ম্যাট্রেস-কম্বলের দিকে আগ্রহ বাড়াছে তো বটেই।
কারিগররা সাদা, চায়না, গোলাপি, শিমুলসহ বিভিন্ন তুলা দিয়ে লেপ তৈরি করছেন। আর কালো রাবিস, কালো হুল, উইল তুলা দিয়ে তৈরি করছেন জাজিম।
তবে আগের তুলনায় লেপ তোশকের উপকরণসহ পরিবহন খরচ বাড়লেও সে অনুযায়ী বাড়েনি কারিগরদের মজুরি। একই সঙ্গে লেপ-তোশকের বিকল্প হিসেবে ক্রেতাদের আধুনিক ম্যাট্রেস-কম্বলের দিকে আগ্রহ বাড়াছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাবও পড়েছে লেপ-তোশক কারিগরদের মাঝে।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দৈনিন্দন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতেই কিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষের। তাই ক্রেতারা অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও অনেক কিছু কেনা থেকেই বিরত থাকছেন।
তবে লেপ কিনতে আসা রাকিব জানালেন, ঘরে মা-বাবা আছেন। উনাদের জন্য নতুন লেপ কিনতে এসেছি। একটু কষ্ট কবে। তাও মায়ের কথা ভেবে কিনতে আসা। উনাদের এখনও লেপই প্রথম পছন্দ।
এদিকে, বাজারের ঊর্ধ্বগতির কারণে এসব দোকানে তেমন ক্রেতা আসছেন না বলে জানান বিক্রেতারা।তারা বলছেন, আগের তুলনায় লেপ-তোশক তৈরির উপকরণসহ পরিবহন খরচ বেড়েছে কিন্তু সে অনুযায়ী যারা কারিগর রয়েছে তাদের মজুরি বাড়েনি। চাহিদা অনুযায়ী ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত লেপ-তোশকে পারিশ্রমিক পাচ্ছি আমরা। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে এ পারিশ্রমিকে আমাদের বেঁচে থাকা দায়।
এছাড়া এখন লেপ-তোশকের বিকল্প হিসেবে ক্রেতাদের আধুনিক ম্যাট্রেস-কম্বলের দিকে আগ্রহ বাড়ায় আমাদের হাতে তৈরি লেপ-তোশকের চাহিদা কমছে। নতুন করে তৈরি করার থেকে পুরোনো লেপ-তোশক যেগুলোতে তুলা কমে গেছে, সেগুলো বাজারে এনে নতুন তুলা যুক্ত করে পুনরায় লেপ-তোশক তৈরি করছেন বেশিরভাগ ক্রেতাই। অপরদিকে চাহিদা থাকলেও দাম বাড়ায় চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক দিতে ও নিতে পারছেন না।
মানিক নামের এক লেপের কারিগর বলেন, কম্বলের কারণে লোকজনের লেপের চাহিদা কমে যাচ্ছে। দামে কম হওয়ায় তারা সেদিকেই বেশি ঝুঁকছে। আর লেপের তুলনায় কম্বল রাখা, ধোঁয়াও অনেক সহজ হয়। তবে পৌষের শুরুতে ক্রেতা চাহিদা একটু বাড়বে।
তিনি বলেন, সব রকমের তুলার দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কাপড়ের দামও প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকার মতো বেড়েছে। কাপড়, সুতা, মজুরিসহ সব খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী বিক্রি করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে খুব বেশি লাভ করা যাচ্ছে না।
সময় জার্নাল/এলআর