সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

শর্করা জাতীয় খাবারের বিকল্প হতে পারে কাসাভা

শনিবার, ডিসেম্বর ২, ২০২৩
শর্করা জাতীয় খাবারের বিকল্প হতে পারে কাসাভা

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশে শর্করা জাতীয় খাবার হিসেবে ধান ও গম বিখ্যাত হলেও এর চেয়ে কম মূল্যের ফসল কাসাভা শর্করার অন্যতম উৎস। এটি পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম শর্করা জাতীয় খাদ্য এবং পৃথিবীর প্রায় ৮০ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য যা বাংলাদেশে শিমুল আলু হিসেবে পরিচিত।

এ ফসল প্রতি হেক্টরে ৩৫ থেকে ৫০ টন উৎপন্ন হয় যেখান ধানের গড় ফলন ২ থেকে ৩ টন। পানির স্বল্প প্রয়োজনিয়তা অর্থনৈতিকভাবে স্বল্প মূল্যের হওয়ায় এ ফসলটি হতে পারে দেশের শর্করা জাতীয় খাবারের অন্যতম বিকল্প। তবে মাটির ক্ষয় হয় বলে মূল ফসলি জমিতে চাষ না করে পতিত জমিতে মাঝারি বা ছোট আকারের চাষাবাদের উপযুক্ত। তবে মানুষ ও প্রাণির জন্য কাসাভা অবশ্যই সিদ্ধ করে খেতে হবে।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কৃষি অনুষদের ফসল উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির। তিনি বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব এবং মাটির অনুর্বরতা বিবেচনায় দেশের মানুষের শর্করার চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশে এ ফসলের মাঠ পর্যায়ের গবেষণা করে সফলতা পেয়েছেন ।  

সম্মেলনে গবেষক ছোলায়মান আলী ফকির জানান, কাসাভা সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে এমনকি গোল আলুর মতো অন্যান্য তরকারির সাথেও রান্না করে খাওয়া যায়।

কাসাভা আটা গমের আটার সাথে মিশিয়ে রুটি, পরোটা, কেক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। আমেরিকার দেশ হাইতি, মেক্সিকান রিপাবলিক, পেরাগুয়ে, পেরু, আফ্রিকার তানজনিয়া, কেনিয়া, জাম্ববিয়া, ঘানা, নাইজেরিয়া এবং এশিয়ার ভিয়েতনাম, ভারতের কেরালা ও তামিলনাড়– রাজ্যে এবং ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনে এই আলু স্যুপ, চিপস, ট্যাপিওকা (সাগুসদৃশ খাবার), পুডিং ইত্যাদি হিসেবে খাওয়া হয়। এছাড়া কাসাভার পাতার প্রক্রিয়াজাতকরণের পর উদ্ভাবিত পিলেট এবং আটা- গরু, ছাগল, মহিষ, মাছ এবং পোলট্রিকে খাবার হিসেবে দেওয়া যায়।

প্রতি ১০০ গ্রাম কাসাভা আলুতে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ শর্করা, ০দশমিক৮ থেকে ২দশমিক৭০ শতাংশ আমিষ, ০দশমিক৫ থেকে ১দশমিক২ শতাংশ চর্বি, ০দশমিক৮ থেকে ২দশমিক৫ শতাংশ আঁশ, ০দশমিক৩ থেকে ২দশমিক৬ শতাংশ খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি ও স্বল্প পরিমাণ লৌহ উপাদানও থাকে।

কাসাভার পাতায় ড্রাইম্যাটার (রোদে শুকানোর পরে অবশিষ্ট অংশ) থাকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ, আমিষ থাকে শুকনো ওজনের ১৮ থেকে ৩০ শতাংশ। এই গাছের পাতা, কান্ড এবং মূল সবকিছুই ব্যবহারযোগ্য। এছাড়া পাতায় কিছু পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও লৌহ উপাদানও থাকে।

তিনি আরোও জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মে চাষ করে হেক্টরপ্রতি ৫০ টন ফলন পাওয়া গিয়েছে। বীজ ও শাখা কাটিংয়ের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার হয়। প্রতি হেক্টরে প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার গাছ লাগানো যায়। গাছ লাগানোর ৭ থেকে ১০ মাস পরে আলু উত্তোলনের উপযোগী হয়। আলু তোলার ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে অন্যথায় পচন ধরতে শুরু করবে।

সতর্কতার বিষয়ে তিনি জানান,  কাসাভা গাছের সর্বত্র বিষাক্ত সায়ানোজেনিক থাকে। তাই বিষাক্ত কিছু জাতের কাসাভার ডগা এবং পাতা খেয়ে গরু/ছাগল মারা যেতে পারে।

তবে সিদ্ধ বা প্রক্রিয়াজাত করলে এই বিষক্রিয়া আর থাকে না। তাই কাসাভা আটা/স্টার্চ সম্পূর্ণ নিরাপদ। আলু উত্তোলনে মাটি ক্ষয় হওয়ার কারণে ফসলী জমিতে চাষ না করাই উত্তম। এজন্য বড় পরিসরে ব্যাণিজিক ভাবে এর চাষ না করে মাঝারি বা ছোট পরিসরে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল