নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এবং সৌদি আরবের কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের (আরএসজিটি) মধ্যে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘কনসেশন চুক্তি’ বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বাড়াতে আরো সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, ‘এই কনসেশন চুক্তি আমাদের দুই দেশের যৌথ স্বপ্নের এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির প্রতি অবিচল অঙ্গীকারের প্রমাণ।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিনিসহ সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহের উপস্থিতিতে সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং ‘আরএসজিটি’-এর সিইও জিন্স ও ফোলি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে, সৌদি মন্ত্রী সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু আমরা এই কনসেশন চুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করছি, তাই আমরা এমন একটি ভবিষ্যতের অপেক্ষায় আছি যেখানে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।’
তিনি বলেন, আরএসজিটি আগামী ২২ বছরের জন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করবে। এটি বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করবে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘এটি বিশ্ব বাণিজ্যের একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে। আমাদের ব্যবসার জন্য বিশ্বের সাথে সংযোগ স্থাপনে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টার্মিনালটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে। কারণ, ভারত, ভুটান এবং নেপালও এই টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালে সৌদি আরবের বিনিয়োগ বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবকে বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার স্বীকৃতি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আশা করি জেদ্দা বন্দর এবং অন্যান্য টার্মিনাল পরিচালনার জন্য খ্যাতি অর্জনকারী আরএসজিটি পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালও তার দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সাথে পরিচালনা করবে।’
এতে করে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম আরো দক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মান পূরণ হবে বলেও উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘এর ফলে, আমাদের অর্থনীতি আমদানি-রফতানি ব্যয় উল্লেখযোগ্য হ্রাস থেকে উপকৃত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আস্থা ও সহযোগিতার জন্য বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি কৃতঞ্জতা প্রকাশ করেন।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দৃঢ় সমর্থনের জন্য সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী ও তার প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ এবং আরএসজিটি চেয়ারম্যান আমের এ আলীরেজা বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এ সময়ে বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান ছাড়াও সৌদি ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সময় জার্নাল/এলআর