নুসরাত জাহান সূচি, জবি সংবাদদাতা:
নারী জাগরণ ও সমৃদ্ধতা বাংলাদেশ অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছে তবুও প্রায়োগিক ও সংখ্যাতাত্ত্বিক উপায়ে নারীকে মূল ধারাকরণ করতে হবে। সরকারি বেসরকারি চাকরি, মিডিয়া ও শিক্ষায় নারীর সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.সাদেকা হালিম।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভারতের মালদাহের রাইগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় ও চাচোল কলেজের যৌথ উদ্যোগে “ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ” (আইসিএসএসআর) এর অর্থায়ন এবং সার্বিক সহযোগিতায় “জেন্ডার ইকুয়ালিটি এন্ড উইমেনস রাইট: এক্সপ্লোরিং উইমেন্স ভয়েস এন্ড এক্সপেরিয়েন্স ইন সাউথ এশিয়া” শীর্ষক দু'দিন ব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের মূল প্রবন্ধিকের বক্তব্যে তিনি এসব এসব কথা বলেন।
আলোচনায় সমাজবিজ্ঞানী সাদেকা হালিম উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট ইন সাউথ এশিয়া: রাইটস এন্ড জাস্টিস শিরোনামের মূল প্রবন্ধে দক্ষিণ এশিয়ার নারীর সমসাময়িক পরিস্থিতির সার্বিক রূপরেখা তুলে ধরেন। বাংলাদেশকে একটি কেস হিসেবে নিয়ে বিভিন্ন প্রায়োগিক ও সংখ্যাতাত্তিক তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং ন্যায্যতা ও সমতায় মুলস্রোতে নারীর মুল ধারাকরণের আলোকপাত করেন। এছাড়া রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারী ও বেসরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে, মিডিয়াতে, নারীর স্বক্ষমতায় উদ্যোগক্তার ক্ষেত্রে, শিক্ষায় নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা ও ন্যযতা এবং বিভিন্নক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। একইসাথে বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্বের বিষয়টি আলোকপাত করেন ড. সাদেকা হালিম।
কনফারেন্সে দক্ষিন এশিয়ার স্বনামধন্য নারীবাদী ও মানবাধিকার স্কলারসদের প্রবন্ধে উঠে আসে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সেশনে নারীদের প্রতি অসমতা, বৈষম্য ও লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর অধস্তনা। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর অধিকার, সমতা, ন্যায্যতা ও নারীর ক্ষমতায়ণের উপর গুরুত্বারোপ করেন প্রবন্ধিকরা।
অনুষ্ঠানে ড. সাদেকা হালিম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নারীর ক্ষমতায়নে সুদূরপ্রসারি চিন্তা এবং বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের বিষয়টির উপরও একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা প্রদান করেন।
এর আগে গত ৫ই ডিসেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন কতৃক আয়োজিত ১১তম বাংলাদেশ বইমেলায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জবি উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম। "দেশভাগ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসচর্চা"। শীর্ষক আলোচনায় তিনি দেশভাগের সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেন।
কলকাতায় নিযুক্ত ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মফিদুল হক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সাদেকা হালিম বলেন, দুই বাংলার মেলবন্ধনের বিষয় এবং উন্নত, মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ মনস্ক-মানস গঠনে বই পড়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনে ৪টি মুলস্থম্ভ - বিশেষভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়টি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দেন।
এমআই