মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চবিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা শীর্ষক সেমিনার

সোমবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
চবিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা শীর্ষক সেমিনার

জাহিদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টার  দিকে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানের আহবায়ক ছিলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা পাল।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, পৃথিবীতে রাষ্ট্রের সৃষ্টির খুব বেশি দিন হয়নি। আমাদের দীর্ঘ জীবন কেটেছে পাহাড়ের গুহায়। এই যে সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন। বর্তমান সময়ে এসে আমরা উপনীত হয়েছি। সামনে আসলে কি হতে যাচ্ছে। রাষ্ট্রে কারা থাকবে এটির উপর মানুষের জীবন মান উন্নতি- অবনতি নির্ভর করছে। প্রত্যেক দেশের সরকার ব্যবস্থা এক নয়। বাংলাদেশের  সংবিধান এর ইতিহাস রয়েছে। আমাদের এই ইতিহাস জানতে হবে।

কার্ল মার্ক্স এর মতে "রাষ্ট্রব্যবস্থা হলো শোষণের হাতিয়ার।" এগুলাকে বিপ্লবের মাধ্যেম পরিবর্তন করে শ্রমিকের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করাই ছিলো মার্ক্সের চিন্তাভাবনা। 


তিনি আরও বলেন, ৭২ এর পার্লামেন্টে মুজিব ৪টি মূলনীতির কথা বলেন, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

এখন মানুষ মূল সমস্যা রেখে শুধু ইসলামকে সবখানে টেনে নিয়ে আসে। কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন আসলেই এখানে ভোট দিলে আপনি বেহেশতে যাবেন। এমন কথাবার্তাও শুনা যায়। সেই প্রেক্ষিতে ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে না আনা। ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার ক্ষমতায় না যাওয়ার কথাই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন। বলেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষতার কথা।


তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিরোধী দল বিজিবিকে হাত করে ক্ষমতায় যাওয়ার পায়তারা করছে।

গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতিই মানুষের জীবন নির্ধারণ করবে। Hatred Culture খুবই সাংঘাতিক। ৭১ এ বাংলার মানুষকে ভাটির মানুষ বলা হয়েছিলো। রেড ইনিডিয়ানদের বেলাতেও এমনি হয়েছে। যেন তারা তাদের স্বকীয়তা ভুলে যায়। বাংলাদেশ কঠিন করোনার মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিনা টাকায় টিকা-সহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সকল বিষয়কে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।


প্রবন্ধ উপস্থাপনায় মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটি রাষ্ট্রের উৎপত্তি দুইভাবে হয়ে থাকে। একটি হলো চুক্তিভিত্তিক আরেকটি শোষণমূলক। আমরা যখন পরাধীন ছিলাম তখন শোষণের বিরুদ্ধে আমাদের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে। এই মুক্তির বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। সাম্রাজ্যবাদীরা বুঝাতে চেষ্টা করে যে তারাই আমাদের অভিভাবক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বিরোধিতা করেছিলো এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ সেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি পুনরায় তৎপরতা শুরু করেছে। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনগণ বিশেষ করে তরুণসমাজকে রুখে দাঁড়াতে এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।


মুক্তিযুদ্ধের পর সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১১ তে গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে "প্রজাতন্ত্র হবে গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত থাকবে।" 


তিনি আরও বলেন, আইয়ুব খান মেলিটারি ডিক্টেটরশিপ এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দল গঠিন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসেন। মার্শাল ল জাড়ি করেন। ক্ষমাতায় এসেই তিনি সংবিধানের রদবদল করেন। 


পরবর্তীতে এরশাদ সরকার এসেও সংবিধানের রদবদল করেন। ধর্মনিরপেক্ষতা তা উঠিয়ে নেন। জাতীয় ধর্ম ইসলামকে স্থান দেন। বর্তমানে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে। সুন্দর একটি দেশ গঠন করতে হলে গণতন্ত্রের ভূমিকা অপরিসীম। 


পরবর্তীতে বিএনপি এসে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তত্ত্ববধায়ক সরকার গঠন করে। আবার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এ সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।


তিনি আরও বলেন, বিশ্বের একমাত্র ২টি দেশে (গ্রীক ও পাকিস্তান) তত্ত্বাবধান সরকারের অস্তিত্ব পাওয়া যাগ। যদিও পাকিস্থান প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সামরিক বাহিনী দ্বারা দেশ পরিচালিনা করে।

কোনো দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা থাকাকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকতে পারেনা। থাকা উচিতও নয়। গণতন্ত্রের সাথে উন্নয়নের সম্পর্ক বিদ্যমান। সুশাসন এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে। গণতন্ত্রে সবার মতামত এর জায়গা থাকে। গণমানুষের অধিকার  নিশ্চিত করে। জনগণই মূল ক্ষমতার উৎস। গণতন্ত্র একটি উত্তম সরকার ব্যবস্থা। 


একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে আমাদের নির্বাচন কমিশন সক্ষম কিনা সেটি তাদের একশন দেখলেই উপলব্ধি করা যায়। বাংলাদেশ ৪৪ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর মধ্যে 
৩০টি দল  মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছে।
৬০.৮ শতাংশ দলের সমন্বয়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সুতরাং, বুঝাই যাচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

এতে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ দৌল্লাহ, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী, প্রবন্ধ উপস্থাপক ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী-সহ অন্যান্য শিক্ষকমণ্ডলি ও শিক্ষার্থীরা।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল