শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার দেওয়া হোক

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার দেওয়া হোক

শিরীন সুলতানা :

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এই শিক্ষার ভিত্তি গড়ার কারিগর শিক্ষক।আর শিক্ষকের সিংহভাগই নারী।
শিক্ষকরাই একমাত্র নিঃস্বার্থ কর্মী যারা কিনা অন্যের সন্তানের ভালো সংবাদে, ভালো কোন পজিশনে বা ভালো চাকুরী পেলে মন থেকে খুশি হন, গর্বিত হন।তোমাকে যে একদিন কোনকালে কিছু শিখিয়েছে সেই তোমার শিক্ষাগুরু।

অথচ এই শিক্ষকরাই সমাজে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। তাদের এখন শাসন করার অধিকারও নেই।পিতৃমাতৃতূল্য এসব শিক্ষকরাই মাঝেমাঝে হুমকির সম্মুখীন হন।তাদের নিজ সন্তান বাসায় রেখে দূর-দূরান্তে গিয়ে দুশ্চিন্তায় থেকে শিক্ষকতা করেন।অথচ প্রতিটি বিদ্যালয়ে যদি একটি করে ডে-কেয়ার সেন্টার রাখা হয় তবে শিক্ষকদের মনও বিদ্যালয়ে এসে বাসায় পরে থাকতো না।মনযোগ আরো বেশি দিতে পারতো শ্রেণিপাঠদানে।আজ থেকে ছয় /সাত বছর আগে তখন আমি গ্রামের (অজপাড়াগাঁয়েই বলতে পারেন) এক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতাম।

সেখানের যিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি বি এ পাশ এবং তাকে সুশিক্ষিতই বলা চলে।তার পরিবারও শিক্ষিত।একবার এক মহিলা কলিগ স্কুলে তার শিশু সন্তান আনার ব্যাপারে অন্যান্যরা অভিযোগ করলে সভাপতি সাহেব বলেন, " আমি চাই না আপনার সন্তানকে আপনি আপনার কাছ থেকে দূরে অর্থাৎ বাড়িতে রেখে এসে এখানে পাঠদান করেন এবং এখানের যে মনোযোগ আপনি শিক্ষার্থীদের দিবেন সবটাই আপনার বাসায় পরে থাকুক।আমি চাই বিদ্যালয়ের শিশুদের ভালো লেখাপড়া।

আপনি যদি মনে করেন এখানে নিয়ে আসলে শিক্ষার্থীদের পড়ানোতে কোন ব্যঘাত ঘটবে না তাহলে আপনার শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে পারেন।আপনি শিক্ষার্থীদের পড়াবেন আর মন পরে থাকবে বাড়িতে এমনটা চাই না।যতোটুকুই শিক্ষার্থীদের দিবেন তার  পূর্নাঙ্গ আত্মনিয়োগ করতে হবে আপনার নিজেকে।

ডেডিকেশনের বিষয়টাই মূখ্য।দেশে অনেক কর্মক্ষেত্রেই ডে-কেয়ার সেন্টার রয়েছে সেখানে হয়তো নারী কর্মী শিক্ষকতায় যত নারী তার অর্ধেকও নেই।অথচ, বিদ্যালয়ে কোন ডে-কেয়ার,মাতৃসদন নেই।

পেশাজীবীদের বাড়ছে ভোগান্তি। একদিকে তার বাচ্চা দেখার কেউ নেই, অন্যদিকে তার চাকরির বয়স চলে গেলে চাকুরি না করলে সামাজিকভাবে তাকে প্রচুর হেয় করা হয়, মেরুদন্ডহীন টাইপ ট্যাগও দেয়া হয়। বলা হয় কিসের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বউ বা মেয়ে একটা চাকুরি জোগার করতে পারে না।একজন ভালো গৃহিনী হবে এমন পেশাকেও কিন্তু  আমাদের সমাজ সাধুবাদ দেয় না।
 
আরেকদিকে যাদের চাকরি আছে তাদের অফিসগুলোতে নাই একটা ডে কেয়ার, পাওয়া যায় না বাচ্চা পালার কাজের লোক। এই কূল ঐ কূল দুই কূলে নাকানিচুবানি খেয়ে খুবই করুণ অবস্থা। 

এই পুঁজিবাদ নারীর শ্রম চায়। কিন্তু নারী মাত্রই যে মা হবে, তার সন্তান তার একার না, সে ভবিষ্যত মানব সম্পদ, যার সুবিধা দেশ ও সমাজ ভোগ করবে। তার দায় তারা এড়াতে চায়। গর্ভকালীন, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়ার বেলায় তাদের কৃপণতার শেষ নাই।ছুটি চাইতে গেলে অফিস চলবে কিভাবে সেই প্রেশার কিন্তু একটা শিশু বাসায় কিভাবে এতক্ষণ মাতৃদুগ্ধ পান না করে থাকবে সেদিকে দেখার কেউ নাই।
 
দেশে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত নারীর মধ্যে সিংহভাগ নারী কর্মজীবীই শিক্ষক। এই সিংহভাগ কর্মজীবী নারীকে মুখোমুখি হতে হয় এই ভোগান্তির। তাই অচিরেই প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটা করে ডে কেয়ার সেন্টার চাই।

শিরীন সুলতানা 
শিক্ষক ও লেখক

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল