শারমিন আক্তার কেয়া, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের একাডেমিক মিটিংয়ে দুই শিক্ষকের মধ্যে কোর্স বন্টন নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এমন কোন বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১২১তম একাডেমিক সভায় দ্বিতীয় সেমিস্টারের কোর্স ভাগাভাগি নিয়ে সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান আবু বকর ছিদ্দিক (মাসুম) ও আলী মোর্শেদ কাজেমের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে উপস্থিত শিক্ষকরা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী মোর্শেদ কাজেমকে রুম থেকে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় সহকারী অধ্যাপক আবু বকর ছিদ্দিকের চশমা ভেঙ্গে যায় এবং আলী মোর্শেদ কাজেমের ব্লেজার ও শার্ট ছিড়ে যায়। এছাড়া উভয়ের চোখে-মুখেই আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে আবু বক্কর ছিদ্দিকের (মাসুম) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। অভিযুক্ত আলী মোর্শেদ কাজেমের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
এছাড়া এ বিষয়ে বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান আবু বক্কর সিদ্দিক সোহেল বলেন, 'কোর্স ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। এর বাইরে আমি কোন মন্তব্য করবো না।'
শিক্ষকদ্বয়ের মারামারির ঘটনা পুরো ক্যাম্পাস জুড়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নানা আকার ইঙ্গিতে এই বিষয়ে কথা বলছেন। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্তব্য করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধ্যাপক পদমর্যাদার এক শিক্ষক বলেন, এটা কখনোই শিক্ষকসুলভ আচরণ না। শিক্ষার্থীরা একটা ব্যাড এক্সাম্পল পেলো এই ঘটনায়। এই ঘটনায় আমরা বিব্রত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার আরেক শিক্ষক বলেন, আমাদের মূল্যবোধগুলো ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে। যার ফলে হচ্ছে এই আলোচিত ঘটনা। আমাদের এই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আরো প্রফেশনালিজমের সাথে বিষয়গুলো হ্যান্ডেল করতে হবে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমি শিক্ষক হিসেবে এই ঘটনায় বিব্রত। আইন অনুষদের শিক্ষকরা আমার কাছে এসেছিল। তারা এ ঘটনায় অনুতপ্ত বলে জানিয়েছে আমাকে। সামনের দিনে তারা মিলেমিশে কাজ করবে বলে কথা দিয়েছে। তবে কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হতো।'
এমআই