সময় জার্নাল ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যার জীবনের গল্প সিনেমাকেও হার মানায়! ছাত্ররাজনীতিতে জড়ালেও জীবনে কখনও ভাবেননি রাজনীতিতে থিতু হবেন।
বিজ্ঞানী স্বামীর ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিল জীবন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ডে বাঙালি জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তান, শেখ হাসিনা হারান পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
এরপরেই তাঁর জীবনের গতিপথ পরিবর্তন হয়। ১৯৭৫ সালের পর শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন এক নতুন পটভূমিতে। তিনি যখন স্বামীর সঙ্গে বিদেশে যান তখন তাঁর পিতা জীবিত, দেশের সরকারপ্রধান। কিন্তু তিনি যখন ফিরে আসেন তখন পিতা নেই, মাতা নেই, নেই ভাই, নেই আরও আত্মীয়স্বজন। এক গভীর শূন্যতার মধ্যে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন নতুন এক গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে। বাবার পথ ধরে রাজনীতি নামেন।
রাজনীতির বন্ধুর পথে পথে হাঁটতে সৃষ্টি করলেন ইতিহাস। রাজনীতিতে অনেকগুলো নতুন রেকর্ড শেখ হাসিনার। ১৯৮১ থেকে ২০২৪। ৪২ বছরের বেশি সময়ের এই যাত্রাপথ শেখ হাসিনার জন্য অবশ্যই ফুল বিছানো ছিল না।
অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে চলতে হচ্ছে তাঁকে। এখনো তিনি দলকে, দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। ইতিহাস যেন তাঁর কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছে অনেক দায় ও দায়িত্ব। দায়িত্ব পালনে তিনি ক্লান্তিহীন যোদ্ধা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁর দল এখন টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। তিনি হবেন টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী। সব মিলে ইতিহাসে পা রেখে পঞ্চমবার বসবেন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে।
এ যাত্রার শুরুটা—১৯৯৬ সাল, সপ্তম জাতীয় নির্বাচন। কঠোর সংগ্রামের জেরে দীর্ঘ ২১ বছর পর আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। সে বছরই দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত গঙ্গা-পদ্মা নদীর ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি করেন তিনি।
২০০৮ সালের নির্বাচন শেষে পুনরায় ২০০৯ সালে নবম সংসদে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই থেকেই শুরু। উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে একাধারে ২০১৪ সালে দশম সংসদ ও ২০১৮ সালে একাদশ সংসদের পর টানা চতুর্থ মেয়াদে আবারও সংসদ নেতা নির্বাচিত হলেন শেখ হাসিনা।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। আবারও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো এবং একটানা চতুর্থবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
দীর্ঘ এই সময়ে দেশের কল্যাণে করেছেন নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, এক্সপ্রেসওয়ে, বিমানবন্দরের মত প্রজেক্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে নেত্রীর হাত ধরে নতুন যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।
তবে তাঁর এ চলার পথ ছিল না নিষ্কণ্টক। নানা সময়ে এসেছে বাধা বিপত্তি, দেখা দিয়েছে অর্থ সংকট! গৃহবন্দি বা নির্বাসনে থাকা, এমনকি গ্রেনেড হামলারও সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। তবু থেমে যাননি। প্রতিনিয়তই কাজ করে গেছেন দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে।
সময় জার্নাল/এলআর