রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরে ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ জবাব দিয়েছে: এ কে আজাদ

মঙ্গলবার, জানুয়ারী ৯, ২০২৪
ফরিদপুরে ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ জবাব দিয়েছে: এ কে আজাদ

এহসান রানা,  ফরিদপুর  প্রতিনিধি: 

ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ নির্বাচনোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের বিরুদ্ধে ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি যেই অপরাধ করেছেন তাতে তিনি গ্রেফতার হওয়ার মতো অপরাধ করেছেন।

তারপরেও আমরা তাকে গ্রেফতারের অভিযোগ করিনি। তার অনুসারীরা একের পর এক সহিংসতা করে নির্বাচনী এলাকায় তান্ডব চালিয়েছে। শুধুমাত্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দিতে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ও ফরিদপুরবাসীর স্বার্থে আমরা সকলকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করেছি। কিন্তু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এখন তিনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আমাদের বিরুদ্ধে নানাধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছেন। 

 মঙ্গলবার দুপুরে শহরের ঝিলটুলীতে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ. কে. আজাদ এ কথা বলেন।

 তিনি বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী শামীম হক জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আমার ভাই। আমি এখনো তাকে অনুরোধ করছি সকল ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা এক সঙ্গে ফরিদপুর উন্নয়নে কাজ করি।

লিখিত বক্তব্যে এ. কে. আজাদ বলেন, প্রচারনা শুরুর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ঈগলের অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট প্রবীন রাজনীতিবিদ ও জেলা পরিষেদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভোলা মাস্টারের ওপর নির্মম হামলা চালানো হয়।

 নির্বাচনের দিনও সকাল থেকে বেশ কিছু এলাকায় ঈগলের কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় শামীম হকের অনুসারীরা। রনকাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে হামলায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন তারা যাহাতে দ্রুত সুস্থ্য হয়ে আসে উপর ওয়ালার কাছে সেই প্রার্থনা করছি। তাদের পরিবারের প্রতি রইল গভীর সমবেদনা।

তিনি বলেন, হামলা, মিথ্যা মামলা ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে মানুষ আমাকে সাহস ও সমর্থন দিয়ে গেছেন। হামলা-মামলার স্বীকার হয়েও কোন প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেনি। ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ জবাব দিয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেও বারবার বলেছিলাম ফরিদপুর যেন সন্ত্রাসের রাজত্ব না হয়, চাঁদাবাজ মুক্ত হয়। সেই অঙ্গীকার থেকেই বলছি ফরিদপুরকে একটি মডেল জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাবো।

তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী এমন একটি নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ফরিদপুরে ৫২ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। বাধা-হামলা উপেক্ষা করে তারা কেন্দ্র গিয়েছেন। কিছু কেন্দ্রে শামীম হকের সমর্থকেরা পেশীশক্তি প্রদর্শন করেছেন।

মাচ্চরের খলিলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটের দিন সাড়ে ৩ টার দিকে শামীম হক ও তার ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী ঐ কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এর পরপরই ৬ টি বুথে ঢুকে তারা ব্যালট ছিনতাই করেন। প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারেরা এর স্বাক্ষী ছিলেন। এরকম দু'একটি ঘটনা ছাড়া ফরিদপুরে নিরব ভোট বিপ্লব ঘটিয়েছেন জনগণ।

সংবাদ সম্মেলনে এ. কে. আজাদের নির্বাচনী এজেন্ট বিপুল ঘোষ বলেন, শামীম হক নতুন করে যেসব উস্কানিমূলক কথা বলছে, তাতে তাকে গ্রেফতার করা উচিত। তাকে আমি গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, কাউন্সিল না করেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক শহর ও ইউনিয়নের কয়েকটি কমিটি করেছেন। আমরা এই সংবাদ সম্মেলন থেকে এসকল কমিটি অবৈধ বলে ঘোষণা করলাম। সুষ্ঠভাবে ভোট হলে আরো বেশি মানুষ ভোট কেন্দ্রে গেলে আমরা দুই লাখের বেশি ভোট পেতাম।

সাংবাদিক প্রবীর শিকদার বলেন, গত এক যুগ এক ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। মানুষ থানায় যেয়ে মামলাও করতে পারেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ফারুক হোসেন, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক নুসরাত রাসুল তানিয়া ও এ. কে. আজাদের একজন পোলিং এজেন্ট মাজবিন ডালিয়া।

এসময় পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মনিরুল হাসান মিঠু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম নীরু, মাহবুব হোসেন, বদিউজ্জামাল বাবুল, বেলায়েত হোসেন ফকির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ. কে. আজাদ বলেন, সন্ত্রাসীদের হয় জেলে যেতে হবে নইলে ফরিদপুর ছাড়তে হবে। এজন্য জনগণের একতা ও উচ্চ মহলের সদিচ্ছা দরকার। তিনি কর্মসংস্থান ও শিক্ষার উন্নয়নে তার প্রতিশ্রুতি পুনব্যক্ত করেন। এসময় ফরিদপুরের বিভিন্ন পেশাজীবি ও সামাজিক সংগঠনের দুরাবস্থা নিরসনে কি পদক্ষেপ নেয়া হবে সে বিষয়েও নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন তার নিকট। 

এদিকে, শামীম হক এক সভায় এ. কে. আজাদের বক্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে সাংবাদিক মাহফুজ মিলন জানতে চান, 'নৌকাকে ভোট দিলে সন্ত্রাসের পক্ষে ভোট দেয়া হবে' বলে প্রতিপক্ষ শামীম হক এমন একটি অভিযোগ করেছেন আপনার (একে আজাদের) বিরুদ্ধে। জবাবে এ. কে. আজাদ বলেন, এটি ফরিদপুর-৩ আসনের জন্য শামীম হকের ক্ষেত্রেই বলেছি। সারাদেশের জন্য না। কারণ আমরাও তো আওয়ামী লীগ করি। আমরাও নৌকার লোক।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল