নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শীর্ষস্থানীয় পানীয় কোম্পানি কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন জু-উন নাহার চৌধুরী। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি এই ফরচুন ৫০০ কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তিনি বটলিং ও ব্যবসায়িক পার্টনার, ক্রেতা এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন।
জু-উন ইউনিলিভারের মার্কেটিং বিভাগের ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ইউনিলিভার বাংলাদেশের
বিভিন্ন পদে তিনি কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বে দেশব্যাপী ‘লাইফবয় হাত ধোয়া ক্যাম্পেইন/হ্যান্ডওয়াশিং ক্যাম্পেইন’
আয়োজন করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নেয়। দেশের ৬০টির বেশি এলাকায় ৮৬,০০০ তরুণ একইসাথে এই
ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে।
২০১৪ সালে রেকিট বেনকিজারে যোগদানের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ায় তার কর্মজীবন শুরু হয়। সেখানে তিনি ডেটলের ব্যবসা
পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে ডানোন ইন্দোনেশিয়ার হেড অফ ইনোভেশন হিসেবে কাজ করার পর তিনি একমার্স-এর এফএমসিজি ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই এন্ড-টু-এন্ড ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেটর প্রতিষ্ঠানটি আসিয়ানভুক্ত ৭টি দেশে কাজ করে। ইন্দোনেশিয়ায় আট বছর কাটিয়ে ২০২৩ সালে দেশে ফিরে তিনি এপেক্স-এর মার্কেটিং ডিরেক্টর হিসেবে যোগদান করেন।
নতুন দায়িত্ব গ্রহণ সম্পর্কে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জু-উন নাহার চৌধুরী বলেন,
“কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশে যোগ দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমাদের বটলিং পার্টনার কোকা-কোলা
বাংলাদেশ বেভারেজেস (সিসিবিবি) ও আবদুল মোনেম লিমিটেড (এএমএল) এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে সম্মিলিতভাবে
কাজ করে ভোক্তাদের সতেজ রাখতেও আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কোকা-কোলা’র এই যাত্রায় বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার
জন্য সম্মানের বিষয়। আমাদের ব্র্যান্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজি অপারেশনকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবো বলে আমি
আশাবাদী।”
জু-উন বাংলাদেশে এই পদে নিযুক্ত হওয়া প্রথম নারী। তিনি ২০২১ সালে যোগ দেওয়া সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা জি
তুং-এর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া (এসডব্লিউএ) অঞ্চলের ফ্র্যাঞ্চাইজি অপারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অজয় বিজয় বাতিজা বলেন,
“কোকা-কোলায় জু-উনকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশের মতো তাৎপর্যপূর্ণ বাজারে টেকসই ব্যবসা গড়ে তোলা কোকা-
কোলা’র কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এই কোম্পানির যাত্রার একটি চমৎকার সময়ে জু-উন আমাদের সাথে
যোগ দিয়েছেন। এফএমসিজি ও ই-কমার্স খাতে তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের পার্টনাররা অনেক উপকৃত
হবেন।”
বাংলাদেশে ১০০% রিসাইকেলড পেট বোতল চালু করা প্রথম কোম্পানি কোকা-কোলা। বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল
মিউজিক প্ল্যাটফর্ম কোক স্টুডিও বাংলা। এই প্ল্যাটফর্মটির ইউটিউব চ্যানেলে ২.৮৬ মিলিয়নের বেশি সাবস্ক্রাইবার
আছে, যা বাংলাদেশের বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোর সম্মিলিত সাবস্ক্রাইবার সংখ্যার চেয়েও বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও
রাজশাহীসহ বাংলাদেশের বড় বড় শহরগুলোতে কোক স্টুডিও বাংলা’র সাবস্ক্রাইবাররা ছড়িয়ে আছেন।
সামাজিক-অর্থবৈতিক প্রভাব (সোশিও-ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট) সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ধারাবাহিক
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশ। ৮৩৩টি প্রত্যক্ষ এবং ২১,৩০০টি পরোক্ষ
কর্মসংস্থানসহ দেশে প্রায় ২২,০০০ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে কোম্পানিটি।
কোকা-কোলা
বিগত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে পৃথিবীকে চাঙ্গা করা ও সমাজে পরিবর্তন আনার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে কোকা-কোলা বাংলাদেশ। আমাদের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে আছে কোকা-কোলা, কোকা-কোলা ডায়েট, স্প্রাইট, ফ্যান্টা, কিনলে ওয়াটার, কিনলে সোডা, কোকা-কোলা জিরো সুগার, স্প্রাইট জিরো এবং থামস-আপ কারেন্ট। কোম্পানি-মালিকানাধীন বটলিং প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেড (“সিসিবিবিএল”) এবং স্বাধীন, অনুমোদিত ফ্র্যাঞ্চাইজি বটলার আবদুল মোনেম লিমিটেড (“এএমএল”) নিয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ সিস্টেম গঠিত। এই সিস্টেম বর্তমানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যথাক্রমে ৮০০-র বেশি ও ২১,০০০ এর বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। ২০২২ সালে দেশে সর্বপ্রথম ১০০% আরপিইটি বোতল চালু করে কোকা-কোলা। ২০২২ সালে যাত্রা শুরু করে কোক স্টুডিও বাংলা’র ইউটউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এখন ২.৮ মিলিয়নের বেশি। মাত্র দুই সিজনেই বাংলা সঙ্গীত ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে প্ল্যাটফর্মটি। জাতিসংঘ নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশ এবং দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন (টিসিসিএফ)। বর্জ্যমুক্ত পৃথিবী বা ওয়ার্ল্ড উইদাউট ওয়েস্ট ও সার্কুলার ইকোনমি গড়ে তোলার জন্য ইমপ্যাক্ট-জিই ও রেজিলিয়েন্ট নামের দুটি প্রকল্পে এসআর এশিয়া ও কর্ডএইড মিলিতভাবে কাজ করছে টিসিসিএফ। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর এবং নারায়াণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে এই প্রকল্প দুটি পরিচালিত হচ্ছে। পানি সংক্রান্ত উদ্যোগ পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানটি ২০৩০ডব্লিউআরজি, ওয়াটারএইড এবং ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন ফর আরবান পুওর (ডব্লিউএসইউপি)-র সাথেও যৌথভাবে কাজ করছে। উইমেন বিজনেস সেন্টারের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ইউনাইটেড পারপাস-এর সাথেও মিলিত হয়ে কাজ করছে এই ফাউন্ডেশন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১ লক্ষের বেশি নারীকে সহায়তা করা হয়েছে।
এমআই