সময় জার্নাল ডেস্ক:
ছিন্নমূল মানুষ যারা দিন এনে দিন খায় তাদের কষ্টের শেষ নেই এই শীতে। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টেই রাত কাটাতে হয় এসব মানুষকে।
রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে শীতের তীব্রতা। রাজধানীতে তীব্র শীতে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে, যাত্রী ছাউনিতে, বড় দালানের দেওয়ালের পাশ ঘেঁষে ঘুমিয়ে রাত কাটান। এসব মানুষকে দেখার যেন কেউ নেই।
রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে, রমনা পার্কের সামনের সড়ক, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেট, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রী ছাউনি, ঢাকা মেডিকেলের সামনে ছিন্নমূল অনেক মানুষকে রাত যাপন করতে দেখা যায়।
এসব ছিন্নমূল মানুষ রাস্তার পাশের ফুটপাতে কোনো রকম পুরোনো কাপড় জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। দিনমজুর, ভবঘুরে, রিকশাচালক এবং ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশায় জড়িত তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সামনের যাত্রী ছাউনিতে থাকা শুক্কুর আলী সারাদিন শহর ঘুরে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো বিক্রি করে সামান্য আয় হয় তার।
তিনি বলেন, ‘গরীব মানুষ থাকার জায়গা নাই৷ রাস্তায় রাস্তায় ঘুমাই৷ কি করমু! ঘর ভাড়া নেওয়ার টাকা নাই৷ দিনের বেলা কিছু কাপড় গুছায়ে এক জায়গায় রাইখ্যা দেই৷ রাইত হইলেই এ্যামনে ঘুমায়ে যাই।’
শিক্ষাভবন মোড়ে দেখা যায় ফুটপাতে বেশ কয়েকজন ঘুমিয়ে আছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে একইভাবে কয়েকজনকে ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের একজন সুরোত মিয়া বলেন, ‘আমরা কাম-কাজ করে খাই। ঘর-বাড়ি নাই। শীতে কষ্ট লাগে। শুনি যে বড়লোকেরা কম্বল দিয়ে যাইবো। এহনও কেউ কম্বল দেয় নাই। একটা কম্বল পাইলে কষ্ট কম হইতো।’
পুরনো একটি কাঁথায় গা মুড়িয়ে শীত নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতেই প্রতিদিনের রাত কাটে তাদের। কাছে গিয়ে দেখা যায়, ফল বিক্রেতাদের ফেলে দেয়া কাগজের ছেঁড়া কার্টন দিয়ে তৈরি করেছে বিছানা। জুরাইন ও গেণ্ডারিয়া বস্তিবাসীর অবস্থাও একই রকম।
শীতের কষ্ট লাঘবে সমাজের উচ্চবিত্তদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন এসব ছিন্নমূল মানুষ।
সময় জার্নাল/এলআর