স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট:
বিপিএলে সিলেট পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচেই রান উৎসব দেখা গেল। ফরচুন বরিশাল বনাম চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মধ্যকার ম্যাচে মোট রান উঠেছে ৩৭৬! ব্যাটিং রাজত্বের ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে চট্টগ্রাম। আগে ব্যাটিং করে ১৯৩ রানের পাহাড় গড়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। পরে ফরচুন বরিশালের ব্যাটাররাও অবশ্য ছেড়ে কথা বলেননি। ১৮৩ রান তুলেছে তামিম ইকবালের দল। যাতে শেষ পর্যন্ত ১০ রানে ম্যাচ হেরেছে বরিশাল।
চলতি দশম বিপিএলে বরিশালের এটা তৃতীয় হার। চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমে তৃতীয় হারের মুখামুখি হলো বরিশাল। অপর দিকে চট্টগ্রাম চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই জিতল।
বোলিং ডিপার্টমেন্টই বারবার ডুবাচ্ছে বরিশালকে। জয় দিয়ে বিপিএল শুরু হয়েছিল বরিশালের। কিন্তু ঢাকা পর্বের বাকি দুই ম্যাচে বড় রান করেও ম্যাচ জিততে পারেনি দলটি। আজও বোলারদের ব্যর্থতা চোখে পড়ল। বরিশালের বিপক্ষে শেষ পাঁচ ওভারে ৮১ রান তুলেছে চট্টগ্রাম।
আজ ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছেন চট্টগ্রামের আইরিশ অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্পার। ব্যাট হাতে মাত্র ৯ বলে ২৯ রান করার পর বল হাতে চার উইকেট নিয়েছেন আবার ফিল্ডিংয়ে চারটি ক্যাচও নিয়েছেন!
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রান পাহাড় ডিঙাতে নেমে বরিশালের শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ। দলীয় ৫৫ রানের মাথায় ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে আহমেদ শেহজাদ ফিরলে ছন্দ হারায় বরিশাল। মাত্র ১৭ বলে ৫টি চার ২টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন শেহজাদ।
এরপর সময়ের দাবি মিটিয়ে তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকু রহিম, মাহমুদউল্লাহরা মারকাটারি ব্যাটিং করতে পারেননি। শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ মাত্র ১৬ বলে ৩টি চার ও ২টি ছয়ে ৩৫ রান করলে বরিশালের জয়ের সম্ভবনা জেগে উঠেছিল।
কিন্তু মিরাজ ফেরার পর মুশফিকু রহিমের ওপর যে দায়িত্বটা ছিল অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তা পালন করতে পারেননি। শেষ দিকে দুনিথ বেল্লালাগে ৪ বলে ১০ রানের একটা ইনিংস খেলে উত্তাপ বাড়িয়েছেন বটে কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি। ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রানে থেমেছে বরিশাল।
অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৩০ বলে ২টি চার ১টি ছয়ে ৩৩ রান করেছেন। মুশফিকুর রহিম ২২ বলে ২৩ ও সৌম্য সরকার ১৬ বলে ১৭ রান করেছেন। চট্টগ্রামের হয়ে কার্টিস ক্যাম্পার ৩ ওভারে ২০ রান খরচায় নিয়েছেন চারটি উইকেট।
এর আগে অভিষকা ফের্নান্দো ও কার্টিসের ব্যাটে ১৯৩ রানের পাহাড় গড়ে চট্টগ্রাম। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন চট্টগ্রামের তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ৪ বলে ১৩ রান করে পঞ্চম বলে আউট হয়েছেন তামিম। তারপর ইমরানুজ্জামান ও শাহাদাত হোসেন দীপুরা টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করতে পারেননি।
তবে দলটির শ্রীলংকান ওপেনার অভিষকা ফের্নান্দো একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন। শেষ দিকে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন অভিষকা। শেষের কয়েকটা ওভারে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পার। এই দুজনের ব্যাটেই মূলত ১৯৩ রানের পাহাড় গড়েছে চট্টগ্রাম।
দুই পেসার তিন স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছিল বরিশাল। অভিষকা ফের্নান্দো ও কার্টিস ক্যাম্পার পেস, স্পিন দুই ধরনের বোলারকেই কচুকাটা করেছেন। চলতি বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরির সম্ভবনাও জাগিয়েছিলেন অভিষকা। কিন্তু শেষ দিকে পর্যাপ্ত বল পেলেন না। ৫০ বলে ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত। তার ইনিংসে চার ৫টি, ছক্কা ৭টি। আর কার্টিস ক্যাম্পার মাত্র ৯ বল খেলে ২৯ রান তুলে অপরাজিত ছিলেন। চার মেরেছেন ৩টি, ছক্কা ২টি। এছাড়া শাহাদত হোসেন দীপু ২৯ বলে ৩১ রান করেছেন।
২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানে থেমেছে চট্টগ্রাম। বরিশালের হয়ে ২৬ রানে ২ উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলামই সবচেয়ে সফল বোলার।
এমআই