মো. জাহিদুল হক, চবি প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইনের জন্মস্থান নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলায় বিষ্ণুপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত 'আলোর দিশারী' সংগঠনের উদ্যোগে এস.এস.সি ও দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার এবং দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকাল ৩ টার দিকে নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলার ৯ নং নবীপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের মুন্সীর টেকে এস.এস.সি ও দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা এবং হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে শীত উপহার অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সংগঠনটি।
মাস্টার মনিরুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় এবং তাজুল ইসলাম মডেল একাডেমির প্রধান শিক্ষক জনাব খায়ের উল্যাহ ভূইয়া আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৯ নং নবীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব বেলায়েত হোসেন সোহেল, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ডিজিএম জনাব আবুল মোবারক এবং ফেনী চরলক্ষ্মীগন্জ নাজেরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নবীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইন আমাদের এলাকার গৌরব। আমি প্রফেসর সাহেবকে আমার ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে প্রখ্যাত ও বরেণ্য ব্যাক্তিত্বে স্হান দিতে পেরে আনন্দিত ও কৃতার্থ হয়েছি।
তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আলোর দিশারী নামক সংগঠনের মাধ্যমে এ রকম অনুষ্ঠান বিরল। অনেকে বড় পজিশনে গিয়ে নিজের এলাকার কথা ভুলে যায়, কিন্তু তিনি ব্যতিক্রম। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে পড়াশোনা করে সুযোগ্য নাগরিকে পরিণত হবার আহবান জানান তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ডিজিএম আবুল মোবারক বলেন, আমি আজকে আমার জন্মস্থানে এ রকম একটি সুন্দর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আনন্দিত। আমি এ জনপদ থেকে ১৯৭৯ সাল মেট্রিক পাশ করে কর্মজীবনে সর্বোচ্চ পদে আরোহন করেছি। শিক্ষার্থীদের হতাশ না হয়ে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে গঠন করার উদাত্ত আহ্বান জানান এবং আলোর দিশারীর মাধ্যমে সমাজের যেকোনো কাজে নিজের সম্পৃক্ত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ফেনী চরলক্ষ্মীগন্জ নাজেরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইলিয়াস বলেন, আলোর দিশারীর মাধ্যমে সমাজ ও দেশের গঠনমূলক কাজ আরো ত্বরান্বিত হোক এ আশাবাদ প্রকাশ করি। তিনি এ অনুষ্ঠান আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত সকলের জন্য দোয়া করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইন বলেন, গ্রামের সকল শিক্ষার্থীদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা প্রদানই আজকের এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। একটি জনপদ কতটুকু উন্নত তা সে এলাকার শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। তিনি শিক্ষার্থীদের গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হবার গুরুত্বারোপ করেন এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দক্ষ জনসম্পদে পরিণত হবার আহবান জানান।
আলোর দিশারী একটি অরাজনৈতিক, শিক্ষা ও সমাজসেবী সংগঠন। গ্রামের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান এবং হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে থেকে প্রতি বছর এ রকম আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বক্তব্যে তিনি আরও বলেন এ ব্যাপারে সমাজের শিক্ষিত ও বিত্তবানদের সার্বিকভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানাই।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মাষ্টার আতাউর রহমান ভূইয়া সোহাগ, মাষ্টার মোস্তফা, আলাউদ্দিন খোকন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ, জনাব মনজুর মোর্শেদ শাহেদ, দৈনিক মানবজীবন পত্রিকার সেনবাগ প্রতিনিধি জনাব নিজাম উদ্দিন খন্দকার সহ অনেকে। অনুষ্ঠানে এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।
সময় জার্নাল/এলআর