তালুকদার হাম্মাদ, ইবি প্রতিনিধি:
"বর্তমান সরকারের আয়ু মাত্র কয়েক মাস। এই সরকারের পক্ষে মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। নির্বাচিত সরকারের প্রতি পরামর্শ তারা যেন তরুণদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। বিপদের সময় তারুণ্যের প্রশিক্ষিত শক্তিই হবে আমাদের প্রতিরক্ষা। তরুণদের মধ্যে আমি অসাধারণ পরিবর্তন দেখেছি। বিশেষ করে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এবং ইসলামী মূল্যবোধে তাদের দৃঢ়তা আমাকে আশাবাদী করেছে" বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
মঙ্গলবার (৫ আগষ্ট) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন , বহিঃশত্রু হিসেবে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে পটেনশিয়াল শত্রু বিবেচনা করতে হবে। ভারত হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র, মায়ানমার বৌদ্ধ রাষ্ট্র। এই বাস্তবতায় আমাদের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে সাবধানে চলতে হবে। আমরা সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী নই, পারমাণবিক শক্তি নেই। তাই আমাদের জাতীয় ঐক্য ও প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বিপ্লব ও অভ্যুত্থান ঘিরে বিতর্ক বহু জায়গায় দেখা যায়। একটি অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য কেবল শাসক পরিবর্তন। কিন্তু জুলাইয়ের আন্দোলন কেবল শাসক পরিবর্তনের নয়, রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য। বিপ্লব একদিনে সম্পূর্ণ হয় না। এটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। আমাদের লক্ষ্যগুলো এখনো পূরণ হয়নি। যতদিন না কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কার হবে এবং সব ধরনের হুমকি থেকে মুক্তি পাবো ততদিন বিপ্লব চলমান থাকবে। এই বিপ্লবে ছাত্ররা নেতৃত্ব দিলেও সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে। কেউ যেন এমন কিছু না করে যাতে এই বিপ্লব প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
বিপ্লবের বিপদ দুটি দিক থেকে আসতে পারে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রু। অভ্যন্তরীণভাবে সমাজে ফ্যাসিবাদের দোসর ও ভারতীয় দালালদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, যারা বিপ্লব ব্যর্থ করতে চায়। বিপ্লবকে টিকিয়ে না রাখলে ইতিহাসে বিলীন হয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আর কখনো ফ্যাসিবাদের বা দিল্লির উপনিবেশে পরিণত করা যাবে না"।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ'র সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।
এছাড়া ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ইউট্যাব সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হক, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, জিয়া পরিষদ সভাপতি ফারুকুজ্জামান, গ্রীন ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদ মোহাম্মদ রেজোয়ান , ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডীন অধ্যাপক আ ন ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি, শাখা বৈবিছাআ'র সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট, শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ছাত্রদল আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদ, ইউনিয়ন সভাপতি নুর আলম সিদ্দিকী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক, কর্মচারী, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।