সৌরভ শুভ, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বহিরাগত স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার ( ৪ ফেব্রুয়ারি ) বেলা ১২ টায় শহিদ মিনার সংলগ্ন রাস্তার সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন শেষে এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
এসময় জাবি উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম এর কাছে ৩ দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো- অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে, অছাত্রদের হল থেকে বের করতে হবে, এই ধর্ষণের বিচার ছাড়া সিন্ডিকেট নয়।
বিক্ষোভ মিছিলে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামিমা সুলতানা বলেন, এমন অথর্ব প্রশাসন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চলে না। প্রশাসনকে বলেছিলাম ৪২ ও ৪৩ ব্যাচ যারা অবৈধ শিক্ষার্থীরা কোন অন্যায় করে সেটির বিচার আপনারা করতে পারবেন না। এখন দেখবো এই ৪৫ ব্যাচ যারা কান্ডটা ঘটিয়েছে তদের বিচারটা কী করেন?
এ ঘটনায় জড়িতদের সার্টিফিকেট বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা সজাগ থাকলে প্রশাসন যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেনা। প্রক্টরিয়াল বডির বিচার ও পদত্যাগের দাবি করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি ও সার্বিক বিষয় সম্পর্কে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, আজ জরুরি সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, গতকাল শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ আবাসিক হলের ৩১৭ নং কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে কৌশলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও মামুনুর রশীদ মামুন।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার অভিযোগে এখনো পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফি। সংবাদ সম্মেলন শেষে আসামীদের ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, হাসানুজ্জামান, ৪৬ তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিক, উদ্ভিদ বিজ্ঞান ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী রাতেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদকে ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভুক্তভোগীকে তার স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে আসামীদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
সময় জার্নাল/এলআর