আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানে জোট সরকারে যেতে আপত্তি জানিয়েছে অন্যতম দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি (সিইসি)। সোমবার রাতে তারা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মধ্যে জোট সরকারের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেছে বলে ওই দেশের মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।
তবে দলটি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আজ মঙ্গলবার তারা আবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একইসাথে তারা জানিয়েছে, তারা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন), ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির সাথেও আলোচনা করবে।
সোমবার রাতে সিইসির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পিপিপি নেতা এবং সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, 'পিপিপি সকল রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলবে। এ নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে।'
তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টায় ওই কমিটি গঠন করা হবে। আর সিইসির বৈঠকও বেলা ৩টায় আবার শুরু হবে।
পিপিপি নেতা শাহজিয়া মারি বলেন, পিপিপির সর্বোচ্চ কমিটি নির্বাচনে অনিয়মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ডনের সাথে আলাপকালে পিপিপির এক নেতা বলেন, সিইসি সভায় একটি বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সেটা হলো কেন্দ্রে আসন্ন সরকারে তারা যোগ দেবে কী দেবে না। তিনি বলেন, সিইসির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য অভিমত প্রকাশ করেছে যে অর্থনীতিসহ নানা চ্যালেঞ্জ থাকায় তাদের উচিত হবে না সরকার গঠন করা।
তারা কেবল সিন্ধুতেই সরকার গঠনের কাজে নিয়োজিত হতে চায়। সেখানে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তবে অনেকেই জোর দিয়ে বলেছে, পিপিপির সমর্থন ছাড়া কেউই সরকার গঠন করতে পারবে না।
পিপিপির ওই নেতা আরো বলেন, দেশ যখন কঠিন পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে, তখন সরকার গঠন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তিনি বলেন, ক্ষমতা ভাগাভাগির যে ফরমুলা মিডিয়ায় এসেছে, তা নিয়ে বৈঠকে এমনকি আলোচনাও হয়নি।
পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্রদের সমর্থন করা প্রশ্নে পিপিপির ওই নেতা বলেন, তারা সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলতে চায়। তবে এজন্য তাদের আগে নিজেদের তৈরী করতে হবে।
উল্লেখ্য, রোববার রাতে পিএমএল-এন ও পিপিপি লাহোরে এক বৈঠক করে। এতে পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। বৈঠকে পিএমএল-এন নিজেরা প্রধানমন্ত্রীর পদটি রেখে পিপিপিকে রাষ্ট্রপতি, সিনেট চেয়ারম্যান এবং পার্লামেন্টের স্পিকার পদটির প্রস্তাব করে। পিপিপি জানায় যে সিইসি বৈঠকে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
পাকিস্তানে নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত আসন সংখ্যা অনুযায়ী ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র সদস্য ৯৩ জন, পিএমএল-এন ৭৫, পিপিপি ৫৪, এমকিউএম ১৭, অন্যান্য স্বতন্ত্র ৯, পিএমএল ৩, আইপিপি ২, বিএনপি ২টি আসন পেয়েছে। এছাড়া একটি করে পেয়েছে পিএমএল-জেড, পিএনএপি, বিএপি, পিকেএমএপি, এনপি একটি করে আসন।
পাঞ্জাবে পিএমএলএন পেয়েছে ১৩৮টি আসন, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্ররা পেয়েছে ১১৬টি, অন্যান্য স্বতন্ত্র ২২টি, পিপিপি ১০টি, পিএমএল ৭টি, টিএলপি ১টি।
সিন্ধুতে পিপিপি ৮৩টি, এমকিউএম ২৮টি, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র ১১টি, অন্যান্য স্বতন্ত্র ৩টি, জিডিএ ৩টি, জেআই ২টি।
খাইবার পাকতুনখাওয়ায় পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র ৮৪টি, স্বতন্ত্র ৮টি, জেইউআইএফ ৭টি, পিএমএলএন ৫টি, পিপিটি ৪টি, জেআই২টি, পিটিআই-পি ২টি, এএনপি ১টি।
বেলুচিস্তানে পিপিপি ১১টি, পিএমএলএন ১০টি, জেইউআই-এফ ১০টি, স্বতন্ত্র ৫টি, বিএপি ৪টি, এনপি ৩টি, বিএনপি ২টি, এএনপি ২টি, এইচডিটি ১টি, জেআই ১টি, আরএইচ হক ১টি, বিএনটি-এ ১টি।
সময় জার্নাল/এলআর