বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ইন্দোনেশিয়ায় আজ বুধবার প্রেসিডেন্ট ও আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় ২০ কোটি ৪০ লাখ ভোটার নতুন প্রেসিডেন্ট, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, সংসদ সদস্য ও স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
১৯৯৮ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরু হওয়ার পর এটি পঞ্চম নির্বাচন।
এ নির্বাচনে দেশটিতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন তা নিয়ে ত্রিমুখী লড়াইয়ে নেমেছেন প্রার্থীরা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান ও জাকার্তা থেকে রাজধানী সরিয়ে বোর্নিও দ্বীপের নুসানতারাতে নেয়া- এই দুই প্রধান ইস্যুই এখন নির্বাচনের আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে।
এবারের নির্বাচনে তিনজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এরা হলেন- বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো, জাকার্তার সাবেক গভর্নর আনিস বাসওয়েদান এবং জাভা প্রদেশের সাবেক গভর্নর গানজার প্রানোয়ো।
বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং উইদোদো সরকারের অন্যতম শরিক ৭২ বছর বয়সী প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তোকে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাবেক এই সামরিক জেনারেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন উইদোদোর ৩৬ বছর বয়সী ছেলে জিবরান রাকাবুমিং রাকা।
নির্বাচনের প্রচারণায় তিনি শিশুদের পুষ্টিহীনতা দূর করতে বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে খাবার বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে তিনি খনিজ পদার্থ নিকেল রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে আগামী দুই বছরে দেশের আয় ১০ গুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
জনমত জরিপে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন জাকার্তার সাবেক গভর্নর আনিস বাসওয়েদান। এবারের নির্বাচনে জয়ী হলে রাজধানীকে বোর্নিও দ্বীপে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ৫৪ বছর বয়সী বাসওয়েদান ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে আসছেন উইদোদোর শাসনামলে গণতন্ত্র বিকাশ লাভ করেনি। সাবেক শিক্ষমন্ত্রী আনিস বাসওয়েদান মনে করেন রাজধানী সরিয়ে নিতে যে খরচ হবে তা দিয়ে আরো ১২টিরও বেশি শহরকে উন্নয়নের আধুনিক ছোঁয়া দেয়া সম্ভব।
জাভার সাবেক গভর্নর গানজার প্রানোয়ো ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাসি স্ট্রাগল পার্টির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন এর আগের নির্বাচনে উইদোদোর নাম প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে। ৫৫ বছর বয়সী এই প্রার্থী তার নির্বাচনী প্রচারণায় অগ্রাধিকার দিচ্ছেন জনগণের স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও খাদ্যের ওপর। তিনি তার রানিং মেট হিসেবে নিয়োগ করেছেন বর্তমান নিরাপত্তামন্ত্রী মাহফুদ মোহাম্মদকে। গানজার দুর্নীতির বিরুদ্ধেও অভিযান চালাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতায় ইন্দোনেশিয়াকে একটি দোদুল্যমান রাষ্ট্র হিসেবে দেখেন মার্কিন কর্মকর্তারা। প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সময়ে চীনের সাথে ইন্দোনেশিয়ার সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে গভীর হয়েছে। যদিও তিনি ওয়াশিংটনের সাথে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্কও বজায় রেখেছেন।
সময় জার্নাল/এলআর