শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ইবিতে বাসে বসাকে কেন্দ্র করে গলা টিপে শ্বাস রোধের অভিযোগ

শনিবার, ফেব্রুয়ারী ২৪, ২০২৪
ইবিতে বাসে বসাকে কেন্দ্র করে গলা টিপে শ্বাস রোধের অভিযোগ

সাইফ ইব্রাহিম,  ইবি প্রতিনিধি:

বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক ছাত্রকে গলা টিপে শ্বাসরোধের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে শনিবার সকালে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এদিকে বিকাল সাড়ে ৩টায় এসব অভিযোগ মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত দাবি করে পাল্টা লিখিত দিয়েছেন অভিযুক্তরা। 

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু জাহেদ। অন্যদিকে অভিযুক্তরা হলেন, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রতন রায় ও রিহাব রেদওয়ান। অভিযুক্তরা শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের অনুসারী।

ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র অনুযায়ী, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য দুপুর তিনটার বাসে উঠেন ভুক্তভোগী। এর আগে থেকেই তার আরেক বন্ধু তার জন্য দুইটা সিট ধরেছিলেন। এর একটি সিটে ভুক্তভোগী নিজে বসে আরেকটি সিটে অভিযুক্ত রতন রায়কে বসতে দেন। কিছুক্ষণ পর রতন নিচে গিয়ে কয়েকজন বন্ধু/বান্ধবীসহ ফিরে আসেন এবং ভুক্তভোগীকে পাশের সিটে চেপে বসতে বলেন। তখন ভুক্তভোগীর বসে থাকা সিটটিতে তার বসতে ভালো লাগে বলে সেখানেই বসতে দেওয়ার জন্য অভিযুক্তদের অনুরোধ করেন। তখন অভিযুক্ত রতন ভুক্তভোগীর কাছে তার সেশন জানতে চায়। এসময়  ভুক্তভোগী ‘সেশন কেন, পুরো পরিচয় দিবো’ বলা মাত্রই হঠাৎ করে রতন তার গলাটিপে ধরে। এসময় রতনের সাথে উপস্থিত আরেক অভিযুক্ত রিহাব রেদওয়ান ভুক্তভোগীর চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়। এসময় ভুক্তভোগী তাদের হাত সরানোর চেষ্টা করলেও তারা না ছাড়লে সে সিট ছেড়ে উঠে যায়। পরে বাসের সবাই চেঁচামেচি করে ভুক্তভোগীকে অভিযুক্তদের হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে অভিযোগে ভুক্তভোগী বলেন, ‘গলা টিপে ধরার পর আমার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। আমার মনে হয়েছিল আমি আর ৯/১০ সেকেন্ড থাকলে মারা যেতাম।’ এছাড়াও ভুক্তভোগীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি আতঙ্কিত। গলাটিপে ধরায় আমার গলায় ক্ষত হয়ে গেছে। প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে রতন রায়, রেদোয়ান মাহমুদ ও তাদের সাথের দুই ছাত্রীর সাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে এসব  অভিযোগকে মিথ্যা, বানোয়াট ও অতিরঞ্জিত দাবি করা হয়েছে৷ গলা চেপে ধরা এবং চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে উল্লেখ করা হয়। তারা বলেন, বাসের পিছনের তিন সিটের মাঝখানের সিট ছিল আমাদের। আমাদের দুই ছোট বোন চারুকলা বিভাগের যুক্তা জ্যোতি গোলজার এবং তাসনিম বিনতে হারুন বাসে উঠলে একজনকে সেই সিটে বসার সুযোগ দেই। যেহেতু তিন সিটের দু'পাশে দুজন ছেলে বসা ছিলো সেহেতু আমরা ওই ছেলেকে মাঝখানের সিটে বসতে বললে সে তার সিট ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়। আমরা সকলে পরবর্তীতে তাকে অনুরোধ করলে সে আমাদের সকলের সাথে উগ্র আচরণ করে। আমরাও তখন তার পরিচয় জানতে চাইলে সে আমাদের দিকে হাত তুলে তেড়ে আসে। পরে পরিস্থিতি উত্তেজিত হতে পারে ভেবে আমরা তার জার্সির এক হাতার একপাশ টেনে নিয়ে গিয়ে বাসের দুতলায় বসিয়ে দিয়ে আসি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রতন বলেন, বাসে সিটে বসা নিয়ে একজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তবে সে যে অভিযোগ করেছে সেটা মিথ্যা। আমি ওই ছেলের গলাটিপে ধরিনি। সিটে বসা নিয়ে আমার সাথে বেয়াদবি করায় আমার বন্ধু রেদওয়ান ওর শার্ট ধরে টান দিয়েছিল।

আরেক অভিযুক্ত রিহাব রেদওয়ান বলেন, সিটে বসা নিয়ে বেয়াদবি করায় রতন উচ্চস্বরে সেশন জানতে চাইলে ওই ছেলে রতনকে হাত দিয়ে সরিয়ে দেয়। এতে এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ছেলে ওখান থেকে উঠে বাসের দ্বিতীয় তলায় চলে যায়।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল বডির মিটিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল (রোববার) সকালে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানিয়ে রেজুলেশন আকারে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল