শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

শনিবার, মার্চ ২, ২০২৪
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা

সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:

কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত সততা ফোয়ারাটি। এছাড়া স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার এবং ‘মুক্ত বাংলা’ স্থাপনাসমূহেরও ঠিকমতো করা হয়না পরিচর্যা। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাগুলো। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এগুলো পরিণত হয়েছে ধুমপায়ী ও মাদকসেবীদের আড্ডাখানায়।

জানা যায়, দীর্ঘ চার বছর ধরে পানির প্রবাহ নেই সততা ফোয়ারায়। ২০১৮ সালে প্রায় ২০লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এটি। উদ্বোধনের পর কিছুদিন চললেও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বর্তমানে বিকল হয়ে পড়ে আছে। নিয়মিত পরিচর্যা না থাকায় ধুলোর আস্তরণে চাপা পড়ে ফোয়ারাটির এখন জরাজীর্ণ অবস্থা। সরেজমিনে দেখা যায়, ফোয়ারার ভেতরের দেয়ালে জন্ম নিয়েছে বটের চারা, যা দীর্ঘদিন ধরে কাটা হয়নি। ফলে নষ্ট হচ্ছে দেয়ালের স্থায়িত্ব। ফোয়ারার পাইপের ওপরের অংশে বেশ কিছু ট্যাপ ভাঙা। এছাড়া সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্যবহৃত লাইটগুলোর অনেকগুলো ভাঙা আর বাকি গুলো নষ্ট। এবং ফোয়ারার চারদিকের চত্বরের টাইলসগুলোরও অধিকাংশ ভাঙা অবস্থায় রয়েছে।  

অন্যদিকে অযত্ন অবহেলায় বেহাল অবস্থায় রয়েছে ফোয়ারার পাশে অবস্থিত স্মৃতিসৌধ এবং প্রধান ফটকের উত্তর পাশে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘মুক্তবাংলা’ও। জাতীয় দিবসসমূহ ছাড়া এসব স্থাপনাগুলোর তেমন কোনো পরিচর্যা করা হয় না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এগুলো পরিণত হয়েছে ধুমপায়ী ও মাদকসেবীদের আড্ডাখানায়। সরিজমিনে দেখা যায়, সিগারেটের প্যাকেট আর উচ্ছিষ্টাংশে ভরে আছে স্থাপনাগুলো। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় ময়লা আবর্জনা ও ধুলোবালিতে একাকার হয়ে আছে। এগুলোর দেওয়াল এবং ফ্লোরে জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন আগাছা ও বটের চারা। ফলে স্থাপনাগুলোর দেওয়াল এবং ফ্লোরগুলো অধিকাংশ জায়গায় ফেটে গেছে। নোংরা অবস্থায় পড়ে থাকায় জুতো পায়েই এগুলোতে উঠে যাচ্ছেন দর্শনার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ এছাড়া স্থাপনাগুলোর আলোকসজ্জার জন্য ব্যবহৃত লাইটগুলোর সবগুলোই নষ্ট এবং ভাঙা। ফলে রাতের বেলা স্মৃতিসৌধটিতে কয়েকটি লাইট জ্বললেও মুক্তবাংলা সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকতে দেখা যায়। অন্যদিকে স্থাপনা দুইটির চারপাশে বনজঙ্গলে ভরে গিয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আদর হোসাইন বলেন, ‘সর্বশেষ ২০১৯ সালে ভর্তি পরীক্ষার সময় ফোয়ারাটি চালু দেখেছিলাম। এরপর দীর্ঘ চার বছরেও আর এটি চলতে দেখিনি। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত এটি সংস্কার করে চালুর ব্যবস্থা করুক। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে স্থাপনাগুলোরও বেহাল দশা। সেগুলোতে বিভিন্ন আগাছা এবং বটের চারা জন্মেছে দেখে মনে হয় কোনো পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি। আসলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অযত্নের কোনো ঘাটতি নেই।’

আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মনির হোসেন বলেন, ‘দেখা যায় শুধুমাত্র জাতীয় দিবসগুলো আসলেই কেবল এই স্থাপনাগুলো ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়। এছাড়া তেমন পরিচর্যা করা হয় না। মেইন গেইটের সামনে হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি হয়তো সবসময় পরিষ্কার করে রাখা হয়। কিন্তু এটির অবস্থানও যদি অন্য স্থাপনাগুলোর মতো একটু বাইরের দিকে হতো তাহলে ম্যুরালটির কি দশা হতো তা সহজেই অনুমেয়।’

এদিকে লোকবল সংকট দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন এস্টেট অফিসের প্রধান সামছুল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরাতো যথাসময়ে কাজগুলো বন্টন করে দিচ্ছি। কিন্তু লোকবল সংকট থাকলেতো কিছু করার নেই। মাত্র ১১জন মালি রয়েছে।

ফোয়ারা চালুর বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘করোনার সময় দীর্ঘ দুই বছর ফোয়ারাটি বন্ধ থাকায় এটার অনেকগুলো পার্ট নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন মটরগুলো মেরামতের কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ফোয়ারাটি চালুর চেষ্টা করবো।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল