আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতাজনিত কারণে মারা গেছে। প্রাণহানির শঙ্কায় রয়েছে আরও কয়েকটি শিশু। রোববার (৩ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে ১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৈদ্যুতিক জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় সেখানে যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা আরও ছয় শিশুর জীবনশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ক্রমাগত বোমাবর্ষণ, ধ্বংসযজ্ঞ এবং চিকিৎসা সরবরাহ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে গাজার অন্তত ৩১টি হাসপাতালকে অচল করে দিয়েছে ইসরায়েল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৫২টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সতর্ক করে বলেছিল, ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকায় শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য অপুষ্টি ‘গুরুতর হুমকি’ হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলা গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষকে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। হামলায় উপত্যকাটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আচমকা হামলা চালায় হামাস ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এরপর থেকেই প্রতিশোধের নামে গাজায় বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এরই মধ্যে অন্তত ৩০ হাজার ৪১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৭১ হাজারের বেশি মানুষ। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের কারণে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে। গত জানুয়ারিতে এক অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
সময় জার্নাল/এলআর