জেলা প্রতিনিধি:
আতঙ্কে কাটছে টেকনাফ পৌর শহরবাসীর। সাবরাং, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দাদেরও নির্ঘুম রাত কাটছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় হোয়াইক্যং সীমান্তে খারাংখালী থেকে ওপারে বিমান ও হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়।
গত সোমবার রাখাইন রাজ্যে রাতভর গোলাগুলি, গ্রেনেড, বোমা ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। পরদিন মঙ্গলবার মংডু শহরের উত্তরে খুমিরখালী, নাফপুরা, বলিবাজার, নাইডাচং, কোয়াচিডং, শিলখালী, কেয়ারিপ্রাং, পেরাংপ্রু এলাকায় একই অবস্থা ছিল। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী সীমান্তের ওপারে বিমান উড়তে দেখা গেছে। এ সময় শক্তিশালী বিস্ফোরণে টেকনাফ সীমান্তে কেঁপে ওঠে।
নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের সংঘর্ষ চলছে।
স্থানীয়রা জানান, টানা এক মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সাথে সঙ্ঘাতে জড়ায় আরাকান আর্মি।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, আরাকান আর্মিকে লক্ষ্য করে কয়েকদিন ধরে মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে সরকারি বাহিনী। পাল্টা গুলি ছুড়ে জবাব দিচ্ছে আরাকান আর্মি। দুই পক্ষের তুমুল লড়াই এবং শক্তিশালী গ্রেনেট, বোমা ও মর্টার শেলের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে মংডুর দক্ষিণাংশের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
স্থলপথে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর টহল সীমিত হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে আরাকান আর্মি মংডুর টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নিতে অগ্রসব হচ্ছে। কিন্তু খাদ্য ও জ্বালানি সঙ্কট দুই পক্ষকেই ভোগাচ্ছে।
গতকাল বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা জাদিমোরা, চৌধুরীপাড়া, বাজারপাড়া, ওয়াব্রাং, মৌলভীবাজার ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কানজরপাড়া ও খারাংখালী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লোকজনের মাঝে আবারো আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ সময় নাফ নদীর ওপারে বিকট শব্দ শোনা গেছে। বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা এক ঘণ্টা হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে।
খারাংখালীর জেলে জালাল আহমদ বলেন, মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি ও বিমান হামলার শুরু থেকে প্রায় ২৫ দিন মাছ ধরতে পারছি না। তাই আমাদের মতো জেলেদের জীবন চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তার জন্য বিজিবি সদস্যরা নাফ নদীতে মাছ শিকার করতে যেতে দিচ্ছেন না।
টেকনাফ পৌর সভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ওপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারের টেকনাফ পৌর শহর, দমদমিয়া, জাদিমোরা, হ্নীলা, উনচিপ্রাং, হোয়াইক্যংয়ের মাটি কেঁপে ওঠছে। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে অনেকের।
এদিকে, টেকনাফ ব্যাটালিয়নের-২ অধিনায়ক লে. কর্নেল মো: মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অস্ত্র ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর