তাওহীদুল হক সিয়াম, বেরোবি প্রতিনিধি:
ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। আর বসন্ত হলো ঋতুরাজ। নিষ্প্রাণ এই প্রকৃতির বুকে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার ঘটে এই বসন্তে। তীব্র শীতে ঝরে পড়া গাছের পাতা বসন্তের আগমনে নতুন করে পাতা গজায়। গাছপালা পুনরায় তার রূপ ফিরে পায়। বসন্তে চারদিকে মুখরিত হয়ে উঠে ফুল, প্রজাপতির পাখির কলোতানে।
কোকিলের কুহু কুহু নাকি নাকি ফুল কে নিয়ে আসে বসন্তের বার্তা? উত্তর খুঁজতে গেলে কিছুটা বেগ পেতে হবে। কারণ বসন্ত এলেও এখন আর আগের মতো কোকিলের কুহু কুহু শোনা যায় না অথচ একসময় কোকিলকেই বসন্তের বার্তা বাহক বলা হতো। কালের পরিক্রমায় আজ তা শুধুই স্মৃতি।
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ বলা হলেও এখন তা আর চোখে পড়ে না। জলবায়ুর পরিবর্তনে ষড়ঋতু যেন আজ বিলীন হওয়ার পথে।
যার ফলস্বরূপ বসন্ত এলেও এখন আর কোকিলের ডাক শোনা যায় না। বসন্তের বার্তাবাহকের খ্যাতি পাওয়া পাখিটাও আর বসন্তের আগমনের বার্তা দেয় না।
ঋতু চক্রের পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ একরেও আগে বসন্ত আসলে ৭৫ একরের ক্যাম্পাসে পাখির কিছিমিছিতে চারপাশ ভরে উঠতো কোকিলের কুহু কুহু ডাক ৭৫ একরের শিক্ষার্থীদের মনে প্রশান্তি দিতো কিন্তু কালের পরিক্রমায় এখন আর কোকিলের কুহু কুহু ডাক শোনা যায় না ক্যালেন্ডারে বসন্ত ঋতু আসলেও বাস্তবে তার ভিন্ন রূপ দেখা যায়।
এই বিষয়ে বাংলা বিভাগের প্রধান তুহিন ওয়াদুদ বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও গাছপালা কমে যাওয়ার নানান কারণে পাখিদের খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে, পাখিদের বংশ বিস্তারেও এর প্রভাব পড়ছে যারফলে এখন পাখিদের সংখ্যা দিনে দিনে কমতে শুরু করছে।
পাখিদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে তিনি বেশি বেশি গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন বিশেষ করে পাখিদের খাবারের কথা চিন্তা করে বেশি বেশি ফলের গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন।
বসন্ত ঋতুতে সবচেয়ে বেশি পাখির গান শোনা যায়। আর এই গানের দলের নেতৃত্ব দেয় সুরেলা কণ্ঠের কোকিল। উঁচু গাছের মগডালে বসে, নিজেকে আড়াল করে সারাদিন কুহু কুহু রবে গেয়ে যায় সে। কোকিলের সেই গানে বিমোহিত হয় মানুষের মন, বিরহী মন হয়ে ওঠে উতলা।
বসন্তের পাখির গান যুগ যুগ ধরে বিমোহিত করে গেছে কবি সাহিত্যিকদের। এই বসন্তকে ঘিরে রয়েছে কতো কবিতা, ছন্দ গল্প আরো কতো কি। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আজ যেনো সেই বসন্তই হারিয়ে যেতে চলেছে তার ঋতুরাজের রাজত্ব।
সময় জার্নাল/এলআর