তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি:
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সাথে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস পালন করা হয়েছে ।
৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) কলেজটির শহীদ বরকত মিলনায়তনে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান খালেদা পারভীন হক'র সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এই সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক , শিক্ষার্থীবৃন্দের উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগম । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো: মহিউদ্দিন ।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন তিতুমীর কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক কাজী ফয়জুর রহমান ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলেজটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগম বলেন , বঙ্গবন্ধু তিনটি দাবি তুলে ধরেছিলেন : অর্থনৈতিক মুক্তি , রাজনৈতিক মুক্তি ও সাংস্কৃতিক মুক্তি । অর্থনীতি ও রাজনৈতিক মুক্তি হলেও সাংস্কৃতিক মুক্তি এখনো হয়নি । সাংস্কৃতিক মুক্তি হলেই স্মার্ট দেশ গঠন করা সম্ভব হবে ।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণে তিনি বলেন, আমাদের কলেজের সামনে একটি শহিদ মিনার রয়েছে। আমরা এটিকে যথাযথ মর্যাদায় রেখেছি।কিছুদিন পূর্বে এর সংস্কারকাজও করেছি।
অনেকে দোল খায়। জুতা পায়ে উঠে যায়। যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে যে কেন এই অবক্ষয়। সেখানে অনেকে মন্তব্য করে বলেছে, এটা মসজিদ বা উপাসনালয় নাকি। যে জুতা পায়ে উঠা যাবে না। এসব বিতর্ক কেন আসে? আমরা কেন বারবার ধর্ম ও সংস্কৃতি গুলিয়ে ফেলছি?
ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ভাষার শহিদের শ্রদ্ধা সম্মান দেখানো আর উপাসনালয়ে গিয়ে মাথা নত এক?কেন বিতর্ক? বিতর্কিত সেই মন্তব্যে অনেকে সমর্থন দেয়।অথচ আমরা তাদের প্রতিবাদ করি না, চিন্তাও করি না। কোনটি ধর্ম এবং কোনটি সংস্কৃতি, তা বুঝতে হবে।
২০৪০ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু। শুধু মেধাবী ছাত্র হলেই হবে না,নেতৃত্বও প্রয়োজন।চিন্তায় চেতনায় কর্মে স্মার্ট হতে হবে।
পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে তিনি বলেন, দেশপ্রেম যার আছে সে ক্যাম্পাস পরিস্কার রাখবে। আমার ক্লিনার ক্যাম্পাস পরিস্কার রাখে।কারা ময়লা করে ক্যাম্পাস? টিস্যু ব্যবহার শিখেছি আমরা। উন্নত হয়েছি। তবে কই ফেলব শিখি নাই। চারপাশে অসংখ্য বিন আছে। অথচ যেখানে সেখানে ময়লা করি আমরা।
তিনি বলেন, আমাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।শুধু জ্ঞান অর্জন নয় তা বাস্তবায়ন ধারন করতে হবে।স্বাক্ষরতার হার বাড়লেই হবে না মার্জিত,পরিমিত হওয়া,কোথায় কি বলা করা দরকার সেগুলো জানতে হবে। অন্যথায় উন্নত হওয়া যাবে না।সব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরন থাকতে হবে।তা নাহলে সোনার মানুষ হওয়া যাবে না।
তিনি জানান, আমরা প্রতিদিন সমাবেশে মাদক বিরোধী স্লোগান দেই। তবে তা বন্ধ করতে হবে বাস্তবে শুধু স্লোগানই নয়। নিজে মুক্ত থাকতে হবে এবং আশেপাশেও মাদক রোধ করতে হবে। যদি এসব বুঝতে শিখি ও প্রয়োগ করতে শিখি।অর্থনৈতিক রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তি পাই। তাহলেই আজকের আয়োজন সফল হবে।
এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক কাজী ফয়জুর রহমান ও তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ রিপন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল।
৭ই মার্চ উপলক্ষে কলেজে অনুষ্ঠিত বইমেলা নিয়ে অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী বলেন, ৭ই মার্চ উপলক্ষে আমরা তিতুমীর কলেজ একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি । বই বিমুখ শিক্ষার্থীরা যেন আবার বইমুখী হয় সেজন্য দিনব্যাপী বইমেলা উৎসব । যেখানে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানার্জনের জন্য অত্যন্ত সুলভ মূল্যে বই নিতে পারবে।
অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পূর্বে তিতুমীর কলেজ কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়াও তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরইউ