লাবিন রহমান:
প্রতি বছর ৮ মার্চ নারীদের সম্মান জানাতে বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day)। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৪'র প্রতিপাদ্য - নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ, এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ।
নারীরা শক্ত হাতে, যত্ন করে সংসার সামলায়, দেশ সামলায়। সেই নারীকে এখনো সম্মান অধিকার এর জন্য দিবসের প্রয়োজন হয়। পৃথিবী যতই এগিয়ে যাক না কেন নারী এখনো শুধু মানুষ নয়, মহিলামানুষ। তাই তো দিবস, প্রতিপাদ্য, উদ্দেশ্য, এসব ঠিক করে নারীকে সম্মান দেখানো হয়। নারীকে সকল সময় চোখে আঙ্গুল দিয়ে মনে করিয়ে দেয়া হয় তুমি নারী।
নারী দিবসের উদ্দেশ্য:
* নারীদের অর্জন ও অবদানের প্রতি সম্মান জানানো।
* নারীদের সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
* নারীদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনকে জোরদার করা।
১৯০৯ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। আরও একটি মত বলে, এটি প্রথম ১৯মার্চ, ১৯১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে পালিত হয়েছিল। তবে রাশিয়াতেই প্রথম বার এই দিনটি পালিত হয় ৮ মার্চ। তবে বহু ঐতিহাসিক অধ্যায় পার করে ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ দিনটিকে রাষ্ট্রসংঘের তরফে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণাটি ১৯০৮ সালের শ্রম আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, যে সময় অসংখ্য মহিলা গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিউইয়র্কের রাস্তায় মিছিল করে, ভাল বেতন, কম কাজের সময় এবং ভোটাধিকারের দাবিতে।
নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কাজের বৈষম্যের অবসানের জন্য যে লড়াইয়ের শুরু হয়েছিল, সেই ইতিহাসকে সঙ্গে নিয়ে আজও পালিত হয় নারী দিবস।
নারীর প্রতি অবমাননাকর আচরণ বন্ধে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। ইতিবাচক ব্যবহারও নারীর প্রতি আচরণে পরিবর্তন আনতে পারে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব সূচকে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে এখনো এমন অনেক পরিবার আছে, যেখানে নারী উপেক্ষিত। অনেক চেষ্টার পরও সামাজিকভাবে নারীর অবস্থান সেভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়নি।
সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় পুরুষকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে। সিডও সনদ অনুমোদনকারী রাষ্ট্রসমূহের একটি বাংলাদেশ। সে অনুযায়ী নারীর প্রতি বিদ্যমান সব ধরনের বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ড, রীতি-নীতি, প্রথা ও চর্চা এ দেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। পরিবার থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র সর্বত্র নারীকে যোগ্য সম্মান দিতে হবে।
নারী দিবস কেবল একটি দিনের উদযাপন নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা। নারীদের সমান অধিকার, সমান সুযোগ, এবং সমান মর্যাদা নিশ্চিত করার প্রতিজ্ঞা। আসুন আমরা সকলে মিলে এই প্রতিজ্ঞা পূরণের জন্য কাজ করি।
নারীদের ক্ষমতায়নই সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। নারী যখন স্বাবলম্বী হবে, তখনই সমাজের অগ্রগতি সম্ভব। তাই, আসুন আমরা নারীদের অগ্রগতিতে সহায়তা করি এবং তাদের সম্ভাবনাকে পূর্ণ বিকাশের সুযোগ করে দেই। দেই যথাযথ সম্মান।
সময় জার্নাল/এলআর