মো. মাইদুল ইসলাম: মনের জোর, নিজের লক্ষ্য ছিলেন অবিচল আর তা থেকেই এসেছে সাফল্যের মন্ত্র। পেশার শুরুটাই ছিল শিক্ষকতা দিয়ে। নানান ধাপ পেরিয়ে এখন তিনি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে। শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও রয়েছে তার উপস্থিতি। পেয়েছেন স্বর্ণপদকও।
‘এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিল তাহে রূপ-রস-সুধা-গন্ধ সুনির্মল’।
বিশ্বের প্রতেকটি অর্জনে নারীর অবদান অনিশিকার্য। সেই সাথে নারীরা আজ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে লাভ করছে উত্তারউত্তার সাফল্যে। কর্মক্ষেত্রের বাঁধা-বিপত্তি পেছনে ফেলে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন শিরিনা খাতুন। আজ ৮ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে জানার চেষ্টা করেছি সহকারী অধ্যাপক শিরিনা খাতুনের জীবনের উত্থান-পতন ও সফলতার মন্ত্র।
তিনি ২০১৮ সালে ইবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১৯ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। । নিজ কর্মগুনে ২০২২ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং দীর্ঘদিন সুনামের সাথে বিভাগের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
একজন নারী হিসেবে বিভাগের দায়িত্ব পালন বিষয়টা কতটা চ্যালেঞ্জের এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আসলে নারী হিসেবে দেখছিনা বিষয়টা। দায়িত্বপালনকালে সবাইকে যদি সহযোদ্ধা মনে করা যায় তাহলে কখনোই সমস্যা না। যেখানে হোঁচট খাওয়ার সুযোগ ও নেই, যেটা আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনো সম্মুখীন হইনি। আমি সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। সে পরিবেশটা কিন্তু নিজেকে তৈরি করে নিতে হয়। সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে না পারলে সে ব্যর্থতা নিজের। আমি পরিবেশটা সুন্দর করলে চারপাশের মানুষেরাও আমাকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করবে। এবং কোন বাঁধাই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা।
বাবা ছিলেন জেলা পোস্ট মাস্টার। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে ছোটবেলা কেটেছে একধিক জেলায়। পড়েছেন ৫ টা স্কুলে। এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন মাগুরা সরকারি গার্লস স্কুল থেকে, এরপরে ঢাকার বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তারপর স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর জীবন শেষ করেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র নীতি ও লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে। যেই বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন সেখানেরই শিক্ষকতা করছেন, দীর্ঘদিনধরেই আছেন বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বেও।
শিক্ষা জীবনে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে পড়া এবং যেগুলো ছিল গার্লস প্রতিষ্ঠান ফলে তিনি মেয়েদের মনসত্তাত্বিক বিষয়গুলো দেখেছেন কাছ থেকে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিরিনা খাতুন জানান, নারীরা আসলে চাইলেই অনেক কিছু পারে। যেটা তিনি তার নিজের জীবনেও করেছেন। তিনি মনে করেন ইচ্ছে শক্তিটাই এখানে বড়।