কাউছার আহমেদ, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নারী অধিকার বাস্তবায়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উদযাপন করা হয়। ১৯১০ সালের ৮ মার্চ কোপেনহেগেন শহরে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মানির নারী নেত্রী কারা জেটকিন দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯১১ সালের ৮ মার্চ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে প্রথম দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়- 'নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ।' তবে এই আলোচনা শুধু দিবসের দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখতে চান না নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) নারী শিক্ষার্থীরা।
এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়- 'নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ।' আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক কাউছার আহমেদ ।
মুসরাত জাহান মারিয়া
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
কালের আবর্তনে সময়ের ব্যবধানে নারীরা আজ নিজ গুণে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিটি পরিবার যদি নারীদের পাশে দাঁড়ায়, তাদেরকে মুক্ত বলাকার মতো উড়তে সাহায্য করে তাহলে নারীরা সকল ক্ষেত্রেই বিশ্ব জয় করতে সক্ষম হবে। আমি একজন নারী আমার মনে হয় প্রতিটি মেয়েরই উচিত নিজেকে গড়ে তোলা।
শিক্ষার কোনো বয়স নেই সুযোগ পেলে যেকোনো বয়সেই শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ কেননা একটা মেয়ে বিয়ে করে সংসারী হওয়ার থেকেও জরুরি আগে নিজেকে স্বাবলম্বীতা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা ও আপন পরিচিতি তৈরি করা। সারা বছর যারা সবার কাছে অবাঞ্চিত, এই নারী দিবসের দিনটিতে তারা সবার কাছে স্পেশাল! শুধুমাত্র ৮ মার্চ নারী দিবসের একটি দিন নয়, পুরুষের পাশাপাশি নারীকে সম্মান করা উচিত সকল ক্ষেত্রেই।
তাসনিম আক্তার
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
নারীদের ক্ষেত্রে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে অর্থ সংকট তৈরি করতে পারে বৈষম্য। এই বৈষম্য দূর করে নারীর সমঅধিকার ও সমসুযোগ নিশ্চিত করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আগ্রহী ও যোগ্য নারীদের জন্যে উচ্চ শিক্ষায় বিনিয়োগ হতে পারে একটি অগ্রণী ভূমিকা।
তবে নারীদের নিজেদের অধিকার ও সম্মান রক্ষায় নিজেদের সচেতন ও যত্নশীল হতে হবে। কথায় আছে, Empowered women, empower women. আগে নিজের ভিত শক্ত করতে হবে। তবেই অন্যকে সাহায্য করা সম্ভব। এক্ষেত্রে নিজেদের জ্ঞান, দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাওয়া, মার্জিত ও রুচিশীল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে নারীদের দৃঢ় অবস্থা বজায় রাখতে প্রয়োজন নিজের উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া এবং অন্য নারীকে সম্মান করা। আশা করি, পৃথিবীতে এমন স্থিতিশীল দিন আসুক, যাতে আর আলাদা করে নারী দিবস পালন করার প্রয়োজন না পড়ে।
আদিবা ইসলাম
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
নারী ও পুরুষ উভয়ে একটি মুদ্রার দুটি পিঠ! উভয়ই সমান সম্মান ও অধিকার পাওয়ার যোগ্য। প্রায়ই। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন উৎসাহ উদ্দীপনামূলক লেখনী পড়ে থাকি। যেখানে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। তবে এসব লেখনীতে মানুষ কেবল পুঁথি বিদ্যার মতো চোখ বুলিয়ে যায়। নিজের মাঝে বিষয়গুলো ধারণ করে অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ। একজন মানুষ যখনই নিজেকে একজন নারীর স্থানে রেখে চিন্তা করবে, তখন কিছুটা হলেও নারীদের সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ও নির্মম বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে! ভালো থাকুক সমাজ, ভালো থাকুক নারীরা!
আরইউ