আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের একটি ত্রাণ কেন্দ্রে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার এক কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২২ জন।
যদিও হামলায় পাঁচজন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে এবং এতে তাদের একজন কর্মী নিহত এবং আরও ২২ জন আহত হয়েছেন।
ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্লজ্জ অবহেলায় তাদের স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে’।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ‘নির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়ে হামাস কমান্ডারকে হত্যা করেছে। ইসরায়েল নিহত ওই ব্যক্তিকে মোহাম্মদ আবু হাসনা হিসাবে শনাক্ত করেছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, তিনি রাফাহ এলাকায় হামাসের সামরিক শাখার ‘কমব্যাট সাপোর্ট অপারেটিভ’ ছিলেন।
এছাড়া গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া নিহত পাঁচজনের নামের তালিকায় এই নামের একজন ব্যক্তিও রয়েছেন।
রাফাহ শহরে বর্তমানে আনুমানিক ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি অবস্থান করছেন এবং বিপুলসংখ্যক এসব মানুষ ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য স্থান থেকে রাফাহতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব সতর্ক করে বলেছেন, শহরটিতে ইসরায়েলি হামলা হলে তা গাজার জনগণকে নরকের আরও গভীর বৃত্তে ফেলে দিতে পারে।
ইউএনআরডব্লিউএর মুখপাত্র জুলিয়েট তোমা বিবিসিকে বলেছেন, হামলার সময় ৬০ জন লোক এই স্থাপনাটিতে কাজ করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া এই স্থাপনাটিকে খাদ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামের গুদাম হিসাবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি, ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলার জন্য দায়ী। আমাদের দল ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং তারাই হতাহতদের সংখ্যা জানিয়েছে।’
বিবিসি বলছে, ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে এবং ২৭ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী চারজন পুরুষ - যাদের একজন মোহাম্মদ আবু হাসনা নামে পরিচিত - নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় হাসপাতালে পাঁচজনের মৃতদেহের পাশে লোকেদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
ইউএনআরডব্লিউএ স্টাফ সামি আবু সেলিম বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এটি ইউএনআরডব্লিউএ’র একটি কেন্দ্র, এটি নিরাপদ থাকবে হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কেউ কেউ পবিত্র রমজান মাসে খাদ্যের অভাবগ্রস্ত লোকেদের জন্য সাহায্য বিতরণের কাজ করতে এসেছিল। হঠাৎ তাদের ওপর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়।’
ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজায় তাদের ১৩ হাজার কর্মচারী রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ১৬৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সংস্থাটির ১৫০টিরও বেশি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংস্থাটির মতে, জাতিসংঘের কেন্দ্রে আশ্রয় খুঁজতে এসে এখন পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
আরইউ