জাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়:
ইফতারের চাঁদা ফেরত চাওয়ায় রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হল কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ২০৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম খালেদুল ইসলাম। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাশফিক আল তৌহিদ এবং তাঁর অনুসারী মোজ্জাম্মেল হক, শাওন প্রমুখ। তৌহিদ বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
লিখিত অভিযোগ, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তাশফিক আল তৌহিদের নেতৃত্বে হল ছাত্রলীগের ইফতার পার্টি আয়োজনের কথা ছিল। এই আয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের কথা বলে গত রোববার তাঁদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলেন তৌহিদের কয়েকজন অনুসারী। গত সোমবার ওই ইফতার পার্টি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর তিনদিন পার হয়ে গেলেও ইফতারের আয়োজন করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী খালেদুল ও তাঁর রুমমেট নাফিস ফাহিম বাড়িতে চলে যাবেন বলে গতকাল বুধবার দুপুরে তাঁদের কাছে টাকা ফেরত চাইতে যান। এ সময় তাঁদের কক্ষে আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ‘শিবির’ বলে মারধরের হুমকি দেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে খালেদুল ইসলামকে মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারা বারবার ইফতারের তারিখ পরিবর্তন করতে থাকেন। কিন্তু আমরা বাড়িতে যাবো বিধায় ইফতারে থাকতে পারছি না। তাই ইফতারের সেই চাঁদা ফেরত চাইতে গেছিলাম। কিন্তু তারা চাঁদা ফেরত না দিয়ে উল্টো কক্ষে আটকে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে। একপর্যায়ে তৌহিদ আমাকে মারধর করতে শুরু করেন। এ ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা তাশফিক আল তৌহিদ ও তাঁর অনুসারী মোজাম্মেল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেন এই প্রতিবেদক। কিন্তু তারা কোনো সাড়া দেননি।
ঘটনার বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো।’ কোনো অপরাধ করে থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছিল। এ ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ব্যাপারে কারো সংশ্লিষ্টতা থাকলে বিশ^বিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমআই