লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক পাষণ্ড পিতার রডের আঘাতে হাত ভেঙে গেছে তার মেয়ের। পিতার বাড়িতে নিজের অধিকার চাইতে গিয়ে তিনি এ হামলার শিকার হন।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে উপজেলার পানপাড়া এলাকার এনায়েতপুর গ্রামের চৌধুরী পাটওয়ারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বৃহস্পতিবার রাতে নিজের পিতা দেলোয়ার হোসেনকে (৬৫) আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেছেন মেয়ে উম্মে আসমা (৩৭)।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী উম্মে আসমা অভিযুক্ত মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেনের প্রথম ঘরের সন্তান। আসমার যখন ৪/৫ বছর, তখন তার পিতা তার মাকে রেখে অনত্র বিয়ে করেন। পরে আসমাকে নিয়ে তার মাতা রামগঞ্জের জগৎপুর গ্রামের নানার বাড়ি চলে যান। কয়েক বছর পরে তার মাতার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। এদিকে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর আসমার কোন খোঁজ রাখেনি তার পিতা। নানার বাড়িতে থেকেই বড় হয়েছেন এবং লেখাপড়া করেছেন আসমা। বড় হয়ে যখন পিতার পরিচয় জানতে পারেন, তিনি নিজ থেকেই পিতার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। তবে পিতা এবং পরের সংসারের মাতা ও ভাই-বোনদেন কারণে অনেকটা অবহেলিত ছিলেন আসমা। এভাবেই কাটে কয়েক বছর।
সম্প্রতি আসমা জানতে পারেন তার পিতা দেলোয়ার হোসেন সকল অর্থ সম্পদ তার অন্য (সৎ) ভাই-বোনদেরকে ভাগ করে দিয়ে দিয়েছেন এবং তাকে সবকিছু থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে বুধবার তিনি পিতার বাড়িতে গিয়ে তার অধিকার দাবি করলে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার পিতাসহ সৎ ভাই-বোনেরা মিলে তার উপর হামলা করে। তার পিতা তাকে রড দিয়ে আঘাত করলে আঘাতটি তার বাম হাতে লেগে হাত ভেঙে যায়। এ সময় তার ভাই তাকে গলাটিপে ধরেন। পরে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
আসমা বলেন, আমি যখন ছোট ছিলোম তখন আমার পিতা আরেকটি বিয়ে করে। ফলে আমার মা আমাকে নিয়ে নানার বাড়িতে চলে যায়। এর পর থেকে আমার বা আমার মায়ের কোন খোঁজ রাখেননি আমার পিতা। বড় হয়ে আমি যখন বাবার কাছে আমার নায্য অধিকার চাইতে গেলাম, তখন আমার সৎ মা ও ভাই-বোনদের ইন্ধনে আমাকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করেছে। আমি আমার ৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তাই পিতার কাছে একটু সহযোগীতা চাইতে গিয়ে হামলার শিকার হই।
হামলার বিষয়ে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল বলেন, ভূক্তভোগী নারী তার পিতাকে প্রধান আসামী করে আরও তিন জনের নামে থানায় মামলা করেছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময় জার্নাল/আরইউ