গবি প্রতিনিধি
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আয়োজনে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাণপুরুষ, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিকল্প চিন্তার অগ্রপথিক, বাংলাদেশে ঔষধ শিল্প বিকাশের অন্যতম কারিগর, দারিদ্র্য মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় আজীবন সংগ্রামী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গবির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি গবির ট্রাস্টি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, 'বঞ্চিত ও পিছিয়ে পরা নারীদের জন্য জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিয়মিত কাজ করে গেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানই হচ্ছে ডা. জাফরুল্লাহ। পরবর্তী প্রজন্মেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জানতে হলে ডা. জাফরুল্লাহ কে জানা দরকার।'
গবির সম্মানিত ট্রাস্ট্রি ও সাবেক বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, 'বাঙালি জাতিকে শিক্ষিত করতে হলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন। শুধুমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেই হবে না। ডা. জাফরুল্লাহ একজন বড়মাপের চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি গ্ৰাম নিয়ে সবসময় চিন্তা করতেন। তাই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।'
এসময় তিনি শিক্ষকদের গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, 'গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নত হয় এবং শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয়। গবেষনার মাধ্যমে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান গুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এতে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।'
স্বরণ সভার মুল আলোচক অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ব্যতিক্রমধর্মী ক্ষণজন্মা ও স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষ ছিলেন। তার স্বপ্ন ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য ছিলোনা। সাধারণ মানুষের সেবায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তার বানানো প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যক্তিগত ছিলোনা, ছিলো সামাজিক সম্পত্তি। রাষ্ট্রের মালিক হবে জনগণ এবং রাষ্ট্র হবে সার্বজনীন এই জন্য তিনি কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন সমাজ বিপ্লবী একজন মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাস্থ্য সেবা সকলে পাবেন এটা ছিল তার মূল লক্ষ্য।'
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ ছিলেন নির্ভীক ও নিঃস্বার্থ একজন মানুষ। তিনি বিলাসী জীবন ত্যাগ করে মানুষের জন্য কাজ করেছেন। হতদরিদ্র মানুষদের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র ছিল গণস্বাস্থ্য।'
এছাড়া তিনি আরো বলেন, 'এ মহান ব্যাক্তির স্মৃতি সংরক্ষিত রাখার জন্য লাইব্রেরিতে থাকবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সংরক্ষণাগার। এজন্য আমাদের কাজ চলমান। তার প্রতিষ্ঠিত সকল প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সবার প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।'
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস. তাসাদ্দেক আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবু হারিস, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যগণ, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
আরইউ