কাউছার আহমেদ, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
দীর্ঘ এক যুগের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। উদ্দেশ্য একটাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ অর্জন করা। উচ্চ শিক্ষায় নিজের পছন্দ মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। আর এটির জন্য প্রাথমিক ধাপ হলো ভর্তি পরীক্ষা। যেটি অর্জন করতে দিন-রাত এক করে দিচ্ছেন তারা! আর এই স্বপ্ন পূরণে তাদের ছায়াসঙ্গী হয়ে আছেন অভিভাবকরা।
আজ শনিবার ( ২৭ এপ্রিল ) ‘এ’ ইউনিটের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) সম্মিলিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। এতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জড়ো হয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে অবস্থান করলেও বাইরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন অভিভাবকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, গোল চত্বর, প্রশান্তি পার্ক, লাইব্রেরি ভবন, কেন্দ্রীয় মসজিদ, খেলার মাঠ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গাছপালার ছায়ায় অভিভাবকদের উপস্থিতি প্রবলভাবে লক্ষ্য করা গেছে।
কেউ কেউ ঘাসের ওপর মাদুর বিছিয়ে শুয়ে-বসে, কেউ গাছের নিচে পেপার বিছিয়ে, কেউ চেয়ারে বসে, কেউ বা পত্রিকা পড়ছেন, কেউ বই পড়ছেন, কেউ আবার ছাতার নিচে অপেক্ষা করছেন সন্তানের জন্য। সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। দেখে মনে হচ্ছে যেন অভিভাবকরা নিজেরাই ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
জীবনকে কাঙ্ক্ষিত রূপ দেয়ার পথে অন্যতম সিঁড়ি হলো এই ভর্তি পরীক্ষা। এই পরীক্ষা শিক্ষার্থীরা দিলেও ছায়া হিসেবে শারীরিক ও মানসিকভাবে সবসময়ই পাশে থাকেন মা-বাবারা। যা একজন সন্তানকে মানসিকভাবে অনেকটাই উজ্জীবিত করে। ফলে একজন সন্তানের জন্য সফলতার পথ তরান্বিত করতে সহজ হয়।
এমনই কয়েকজন অভিভাবকের কথা বললে তারা জানায়, সন্তানদের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তাদের সুপ্ত অনুভূতি। সন্তানকে নিয়ে দেখা তাদের স্বপ্ন।
বসুরহাট থেকে আসা অভিভাবক মনছুর আলী বলেন, আমার একমাত্র ছেলের পরীক্ষা। অনেক দূর থেকে এখানে এসেছি। উদ্দেশ্য একটাই, আমার সন্তান যেন এখানে চান্স পায়। আমার সন্তান পরীক্ষায় বসার পর থেকেই সার্বক্ষণিক চিন্তায় হচ্ছে’। মনে হচ্ছে, এই ভর্তি পরীক্ষা শুধু সন্তানের নয়, আমি নিজেই পরীক্ষা দিচ্ছি।
ঘাসের ওপরে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে থাকা নিঝুম দ্বীপ থেকে আসা এক বাবা বলেন, ‘সারারাত জার্নি করে সকালে এসে পৌঁছেছি। মেয়েটা ক্লান্ত হয়ে গেছে। খুব চিন্তা হচ্ছে। জানি না মেয়েটা কেমন পরীক্ষা দিচ্ছে।’
কুমিল্লা থেকে আসা এক অভিভাবক হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া, ছোটো মেয়েটা যেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। কারণ এখানকার পরিবেশটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটাই উচ্চ শিক্ষার জন্য উপযুক্ত ক্যাম্পাস। আল্লাহ যেন আমার মনের আশা পূরণ করেন।’
এমআই