রাবি সংবাদদাতা
বান্দরেবানে কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের নামে গণগ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালন করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন রাবির প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। এসময় তাদের কর্মসূচিতে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বাধা প্রদান করে বলে অভিযোগ করেন তারা।
তাদের অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আশাবুল হক এসে তাদের কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চান। এসময় তিনি এধরনের কর্মসূচি পালনের পূর্বে প্রক্টরের অনুমতি গ্রহণের আদেশ দেন। প্রক্টরের এই আচরণকে অগণতান্ত্রিক বলে দাবি করেছেন ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
এসময় তারা 'অভিযানের নামে শিক্ষার্থী, নারী, শিশুসহ গ্রেপ্তারকৃত সাধারণ বন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাও', 'জাতিগত নিপীড়ন বন্ধ কর', 'পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত সড়কের নামে পাহাড়ি উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র বন্ধ কর', 'পাহাড় সমতলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত কর' লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাকিল হোসেন বলেন, আমরা এমন দেশে বাস করছি যেখানে বিভিন্ন জাতির বসবাস আছে কিন্তু তাদের জাতিগত স্বীকৃতি নেই। সংবিধানের মধ্য দিয়ে জনগণের মৌলিক অধিকার অর্জন করার কথা ছিল কিন্তু সেখানে বিভিন্ন রকম দমন নিপীড়ন এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। এই দমন নিপীড়ন শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামে নয় পুরো দেশ জুড়ে হচ্ছে। আসুন আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে এই খেটে খাওয়া মানুষের এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।
মানবন্ধনে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদ রাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সমু চাকমা বলেন, আজকে শুধু বান্দরবানে জনগণের উপর দমন-পীড়ন চলছে তা নয়, সেনাশাসনের মাধ্যমে সারা পার্বত্য চট্টগ্রামে এই দমন-পীড়ন জারি রাখা হয়েছে। প্রতিনিয়ত ধরপাকড়, খুন-গুম, নারী নির্যাতন চলছে। যার কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কেউ আজ নিরাপদে থাকতে পারছে না। বান্দরবানে নির্বিচারে গণগ্রেফতার ও হয়রানিকে মানবিক বিপর্যয় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। এসময় ব্যাংক ডাকাতি ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা এবং আটককৃত নিরপরাধীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তিনি।
কর্মসূচিতে বাধা প্রদানের বিষয়ে নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদি হাসান মুন্না বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই নানা কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনা করে থাকি। কখনো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। আজ প্রক্টর স্যার এসে আমাদেরকে কর্মসূচি আয়োজন করতে অনুমতি নেওয়ার ব্যাপারে এক রকম হুমকি দিয়ে যান। যা ইঙ্গিত দেয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের আইন অনুযায়ী ক্যাম্পাসে কোন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হলে প্রক্টর দপ্তরকে জানাতে হবে। তারা না জানিয়ে এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। আমি গিয়েছিলাম কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে। তাদেরকে শুধু পরবর্তী কর্মসূচি পালনে প্রক্টর দপ্তরকে জানাতে বলা হয়েছে।'
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া দলগুলো হলো - বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র গণমঞ্চ।
আরইউ