আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে এই সময়ের সবচেয়ে বড় জলবায়ু দুর্যোগ হিসেবে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ৭৮ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া বন্যার পানি ওঠার কারণে আরও এক লাখ ১৫ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যার পানি থেকে মানুষকে রক্ষায় উদ্ধার তৎপরতা চলছে তবে ক্রমশ বাড়তে থাকা বন্যার পানির তোড়ে তা করতে গিয়ে উদ্ধারকর্মীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। এতে হাজার হাজার লোক সারা বিশ্ব থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। গত কয়েকদিনের অতিরিক্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে এই বন্যা সৃষ্টি হয়েছে।
রিও গ্রান্দে দো সুল রাজ্যের রাজধানী পোর্তো আলেগরেতে লোকজন উদ্ধারকর্মীদের সাহায্য পেতে বাড়িঘরের ছাদে অবস্থান করছে। অন্যদিকে নদীতে পরিণত হওয়া রাস্তাগুলো দিয়ে ছোট ছোট নৌকায় এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন কিছু লোকজন।
কোনো কোনো জলবায়ু বিশারদের বক্তব্য অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন ও এল নিনোর প্রভাকে সৃষ্টি হওয়া এই ‘দুর্যোগের ককটেলে’ লোকজনকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে তিন হাজারেরও বেশি সেনাসদস্য, দমকল বাহিনীর কর্মী ও অন্যান্য উদ্ধারকারী সংস্থার সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে লোকজন খাবার, পানি ও বিদ্যুতের সরবরাহের অপ্রতুলতায় অনেকটা বন্দি হয়ে পড়েছেন। সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত আরও প্রায় ১০৫ জন লোক নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা পুনর্গঠন কাজের জন্য সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনা সদস্যরা ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে চিকৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী দল তৈরি করে লোকজনকে লাইফ জ্যাকেট, খাবার পানি ও জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রায় ১৪ লাখ লোক অধ্যুষিত পোর্তো আলেগরে শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া গোয়াইবা নদীর পানি প্রায় ১৮ ফুট উচ্চতায় বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এই পানি প্রবাহ ১৯৪১ সালে সেখানে তৈরি হওয়া প্রলয়ঙ্কারী বন্যার পানির চাইতেও বেশি।
সময় জার্নাল/এলআর