শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

কুবি উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান শিক্ষার্থীদের

সোমবার, মে ৬, ২০২৪
কুবি উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান শিক্ষার্থীদের

কুবি প্রতিনিধি 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আবাসিক হল নিয়ে ‘উস্কানিমূলক ও মানহানিকর' মন্তব্যের প্রতিবাদে উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়া এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে  প্রশাসন বরাবর চিঠি দিয়েছে পাঁচ শিক্ষার্থী।

রবিবার (৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী বরাবর এই চিঠি দেয়া হয়। 


পাঁচ হলের পক্ষ থেকে চিঠি প্রদানকারী শিক্ষার্থীরা হলেন- শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী রবি চন্দ্র দাস, শেখ হাসিনা হলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী তানজিনা আক্তার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী উজ্জ্বল হক, কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাছুম।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩ তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে আবাসিক হলগুলো বন্ধের ঘোষণা করা হয়। আবাসিক হল বন্ধের কারণ হিসবে উল্লেখ করেন যে, "আবাসিক হলগুলোতে প্রচুর অস্ত্র ঢুকতেছে এবং শিক্ষার্থীদেরকে টাকা দেওয়া হচ্ছে।" আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা এতে বিস্মিত ও হতভম্ব হয়ে পড়ে। উপাচার্যের এ দাবি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য সামাজিকভাবে অপমানজনক। আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষগণও এ ধরণের মন্তব্যকে অনৈতিক বলে মনে করেন। হলসমূহে অস্ত্র কিংবা টাকা ঢুকছে না। এধরণের মন্তব্যের কারণে সারাদেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষগণও  শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা  প্রকাশ করেছেন।'

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্যকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ৯৩ তম সিন্ডিকেটের দাবি প্রত্যাহার করতে হবে। দ্রুতই প্রজ্ঞাপণ জারি করে আবাসিক হলগুলো খুলে শিক্ষার পরিবেশ ও মান সমুন্নত করতে হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দেয়া শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রবিন দাস বলেন, ‘উপাচার্য স্যার দাবি করেছেন, আবাসিক হলগুলোতে প্রচুর অস্ত্র ও টাকা দেওয়া হচ্ছে।  উপাচার্য স্যারের এই দাবি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের জন্য লজ্জার ও অপমানজনক। এই বক্তব্য আমাদের নৈতিকতা বিরোধী ও আমাদের স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়া ব্যহত করে। উপাচার্যের এই উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্যের মাধ্যমে সারা দেশে তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন। তাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের স্বাভাবিক পরিবেশ ও শিক্ষার মান সমুন্নত রাখতে উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং আমাদের হলসমূহ খুলে দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তিনি আমাদের দাবি না মানলে আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপে যাবো।'

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম বলেন, 'গত ৩০ এপ্রিল জরুরি সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল সমূহ বন্ধের নির্দেশ দেন। তার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, হলে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ অস্ত্র এবং অর্থ ঢুকছে। এ মন্তব্য দ্বারা তিনি কি বুঝিয়েছেন? আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীরা টাকার কাছে বিক্রি হয়েছি! আমাদের হাতে যে কেউ টাকা, অস্ত্র ধরিয়ে দিলে আমরা বিক্রি হয়ে যাবো? এ হল সমূহে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা থাকে। এখানে অনেকেই আছে যারা টিউশন করে পরিবারের খরচ চালায়। অনেক কষ্টে তারা পড়াশোনা করে। এ ধরণের মন্তব্য তাদের পরিশ্রমকে ছোট করে। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া এমন ভিত্তিহীন মন্তব্য একজন উপাচার্যের মুখে মানায় না। তিনি তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হেয় করেছেন, আমাদের অপমান করেছেন, আমাদের মনঃক্ষুণ্ন করেছেন। উপাচার্যের উচিততার এমন ভিত্তিহীন মন্তব্যের জন্য সকল সাধারণ এবং পাঁচ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া।  সেই সাথে সিন্ডিকেট সভায় আবাসিক হল সমূহ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে  তা অবিলম্বে আনুষ্ঠানিকভাবে উঠিয়ে নিতে হবে। এর জন্য উপাচার্য মহোদয়কে ৪৮ ঘন্টার সময় দেওয়া হয়েছে।'

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সভায় অনেকে অনেক ধরনের কথা বলেন। যেখানে ফর্মাল-ইনফর্মাল অনেক কথাই থাকে৷ যে সিন্ডিকেট সদস্য এ কথা সিন্ডিকেটের বাইরে বলে বেড়াচ্ছেন তিনি সিন্ডিকেটের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া সিন্ডিকেটের অফিসিয়াল বক্তব্যে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কারণ হিসেবে একথা উল্লেখ করা হয়নি। বরং উদ্ভুত সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।'

আরইউ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল