নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শান্তিনেকেতন সংলগ্ন ভিস্তা ক্যাফে রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে পঁচা-বাসি খাবার পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার(২১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বাসি-পঁচা খাবার বিক্রির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় ওই পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা খাবার নিয়ে একের পর এক অভিযোগ করেন রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম আনিকা আনজুম মেহের। তিনি বলেন, আজ সকালে ভিস্তা ক্যাফেতে নাস্তার করতে যাই। আমাকে ডাল-পরোটা দেওয়া হয়। ডাল মুখে নিয়ে মনে হচ্ছিল ডাল গন্ধ গিয়েছে। তখন আমি ক্যাশিয়ারকে বিষয়টি বলি, তিনি আমার সাথে বাজে ব্যবহার শুরু করেন। তিনি বলেন, আপনার একা লাগলে তো হবে না অন্য কাউকে দিয়ে টেস্ট করান। পরবর্তীতে আমি এক ভাইয়াকে দিয়ে টেস্ট করালাম, উনার কাছেও গন্ধ লেগেছে, কথাটা ক্যাশিয়ারকে বলার পর উনি কথা আমলে না নিয়ে ডিম নিতে বলেন। পরবর্তীতে আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ডালের ব্যাপারে কথা বলায় ও উপস্থিত ভাইদের চাপে ডাল সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমরা যারা মেসে বা হলে থাকি আমাদের সকালের নাস্তা প্রতিদিনই এখানকার দোকানে করতে হয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে ইস্যু বানিয়ে প্রশাসনের নিয়ম কানুনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিদিনই বাড়তি দামে খাবার বিক্রি করছেন। এই বাড়তি দাম দিয়েই অনেকে একটু ভালো মানের খাবারের আশায় এখানে এসে এইসব পচা বাসি খাবার খাচ্ছেন। এইসব সিন্ডিকেটের সত্যিই একটা বিহিত হওয়া দরকার। তাই আমি সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি। আমরা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার চাই।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে টং দোকান, ভিস্তা ক্যাফে, ক্যাফেটরিয়ার বিরুদ্ধে নিম্নমানের পঁচা বাসি খাবার পরবেশন ও দামের সাথে খাবারের মানের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ ওঠে। তবে এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি৷
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মাশরাফি বিন আজাদ বলেন, কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে খাদ্যসন্ত্রাসীদের তৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ভিস্তা ক্যাফেতে খবারের মানের সাথে দামের সমন্বয় নেই বললেই চলে। এছাড়াও মাঝে মধ্যেই খাবারে পোকা পাই। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিচরণ ক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা না গেলে দেশ মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত হবে। নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী হোটেল সমূহের খাবারের মান চরম নিম্নমানের। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বদিচ্ছা থাকলে নোবিপ্রবিকে নিরাপদ খাদ্যের ক্যাম্পাসে পরিণত করা সম্ভব।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভিস্তা ক্যাফের ম্যানেজার বলেন, সকলের নাস্তা রেডি করতে যে সময়ের প্রয়োজন হয় সকালে সেই সময় আমরা পাইনা। তাই আগের দিন রাতে ডাল,ভাজি রান্না করে রাখতে হয়। গরমের কারণে হালকা নষ্ট হতে পারে। পরবর্তীতে এই বিষয়ে নজর দিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান রিমন বলেন, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
এমআই