রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবীতে হল গেটে তালা দিয়ে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হল গেটে 'লাল কাপড়' ঝুলিয়ে প্রতীকী লাল কার্ড দেখিয়েছে। সোমবার (২৭মে) দুপুরে হলের ডাইনিংয়ে দুপুরের খাবারের তরকারিতে এক শিক্ষার্থী সিগারেটের খোসা দেখতে পায়। এই ঘটনার সুত্র ধরে হলের ডাইনিংয়ে ভাংচুর শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
পরে হলের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে গেটে তালা দিয়ে তারা আন্দোলন শুরু করে এবং ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগ দেয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা হলের প্রধান ফটকে লাল কাপড় টানিয়ে এবং গেটে তালা দিয়ে অবস্থান নিয়েছে। এসময় তাদের প্রাধ্যক্ষকে নিয়ে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে শিক্ষার্থীরা হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষের উপরের নেমপ্লেট এবং তালা ভেঙে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেয়। একে একে তারা হলের একটি সিসিটিভি ক্যামেরা, একটি ঘড়ি, নোটিশবোর্ড ও গেস্টরুমে ভাংচুর করে।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হলের পানি সমস্যা সমাধান, ক্যান্টিন সংকট নিরসন, ইন্টারনেট সমস্যার সমাধান, ডাইনিংয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার বন্ধ, খেলার সরঞ্জামের সংকট নিরসন, সিসিটিভি ক্যামেরা সংস্কার, পাঠাগার সংকট দূর করার দাবি জানায়।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে হলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ এবং সহকারী প্রক্টর জাকির হোসেন। তারা ছাত্রদের সাথে কথা বলেন এবং সংকট নিরসনের আশ্বাস দেন। সেইসাথে আগামীকাল (২৮ মে) শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে আলোচনা করার কথা জানান।
এরপরেও আন্দোলন না থামলে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ঘটনাস্থলে আসেন। এরপরই প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক উপস্থিত হন। সেসময় আগামীকাল (২৮ মে) হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে আলোচনা করার কথা জানান। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে আশ্বাস দিলে আন্দোলন শেষ হয়।
এবিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ছাত্রদের সাথে কথা বলেছি। তাদের দাবির বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিবো বলে আশ্বাস দিয়েছি। দুপক্ষের সাথেই কথা বলে দেখবো। শুধু একপক্ষের সাথে কথা বলে তো আসলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়না।
এ বিষয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, আসলে আমরা নিজেদের বাসায় খাবারের মধ্যেও বিভিন্ন কিছু দেখতে পাই। এটা অনেকটস নরমাল বিষয়। এ নিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবির প্রশ্ন উঠার কথা না।
পদত্যাগের দাবী ওঠার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন , শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে লতিফ হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতা আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য এথলেটিক্স খেলায় প্লেয়ার হিসেবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তাদের মনোনীত কয়েকজনকে সুপারিশ করে। কিন্তু তাদের অযোগ্যতার কারণে বাছাইতে বাদ পড়ায় হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অসন্তুষ্ট হয়। এরপরে হল ছাত্রলীগের জন্য তারা ২০ পিচ জার্সি দাবি করলে তাও নাকচ করা হয়। এসব নিয়ে অসন্তোষ থেকেই তারা এ আন্দোলন উস্কে দিয়েছে।
এমআই