মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আসন্ন বাজেট নিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক পারভেজের বিশ্লেষণ

বুধবার, জুন ৫, ২০২৪
আসন্ন বাজেট নিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক পারভেজের বিশ্লেষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। গরীবের সুবিধার জন্য বাজেট কেমন হওয়া উচিৎ, করের চাপ গরীবের উপর প্রভাব, দেশের বেকারত্ব ইত্যাদি নিয়ে এবারের আসন্ন বাজেট নিয়ে বিশ্লেষন করেছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক পারবেজ। 

অধ্যাপক পারভেজ বলেন, বাজেটে গরীব মোটা চাল,ডাল খাওয়ারও নিশ্চয়তা পায়না। সারাবছর গরীব মানুষ খেতে পায়না। বাজেটে অন্যান্য বছর যা হয়েছে এবছরও গরীবের জন্য তাই থাকবে। নতুন কোন সুসংবাদ এবছরও গরীবের জন্য নেই। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে প্রায় একই পরিমান অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হবে। গরীবের জন্য সুখবর না থাকলেও দুঃখের খবর রয়েছে সেটা হচ্ছে বাজেটের পর প্রতিবছর দাম বাড়ে, এবারও বাড়বে। তবে সরকার সচেষ্ঠ আছে, গরীবের জন্য ভর্তুকি দিয়ে পণ্য বিলাবে সরকার।

তিনি বলেন, বাজেটের বেনিফিসিয়ারি ক্লাস গরীব নয়। বাজেট যেহেতু গরীবকে মাথায় রেখে করা হয়না তাই বাজেটের সুফল গরীব পায়না। গরীব তার দুই বেলা খাওয়া ও বাচ্চা লালন করতেই হিমসিম খাচ্ছে। আমাদের এখানে এটা চলমান। এখানে গরীব বঞ্চিত। এজন্য আমি গরীব বান্ধব বাজেট নিয়ে চিন্তা করি। যেন গরীব বাঁচে। 

আমাদের এখানে এত বৈষম্য ছিলনা। পাকিস্তান আমলে ২২ টি কোটিপতি পরিবার ছিলো, এখন সেটা ২২০০ পরিবারের মত হয়েছে। কারণ, এখন দুর্নীতিগ্রস্ত আমরা। পুলিশ, ভিসি, সচিব দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা এই সংখ্যাটা গিয়ে বিশ হাজারের উপরে রয়েছে। দেশের ইনকাম সাইকেলে গরীব শুধু আছে কৃষি অর্থনীতি, গার্মেন্টস শ্রমিক, দাড়োয়ান ইত্যাদি হিসেবে আছে। এরা এখনো নির্ভরযোগ্য একটা আয়ে নাই। আমাদের বেকার আছে ধরেন ২ কোটি। আবার প্রচ্ছন্ন বেকার রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে টাকা তোলা,  নারীদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে সামনে আনা এগুলোর ক্ষেত্রে কিন্তু সব জায়গায় সেই কোটিপোতিরা। তারাই বাড়ি করতেছে, ব্যাংক করতেছে। সো, তারাই ইনকাম জেনারেটিং মেশিনের পাইলট, গরীব সেখানে সাইড ডিশ। 

এইটা গরীব বান্ধব যদি হয়। গরীব বান্ধব অর্থনীতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী একবার বলেছিলো, প্রতিটা ঘরে একটা একটা চাকরি দিবে। প্রতিটা ঘরে একটা চাকরি দিলে আমদের প্রায় ৩০ লাখ বেকার আছে। এরা চাকরি পেলে প্রায় এক কোটি বিশ লাখ মানুষকে তারা টানবে। কিন্তু সেরকম কোন উদ্যেগ আমাদের নেই, কর্মসংস্থানের কোন সুপরিকল্পনা আমাদের নেই, বিদেেশে লোক পাঠানো ক্ষেত্রে ব্যর্থতা। সবকিছু  হচ্ছে গরীব বিরোধী তাই অর্থনীতিটাও সাসটেইনেবল হচ্ছেনা। 

সরকার যতই স্বপ্ন দেখাক বাস্তবতা হচ্ছে যুদ্ধ সবকিছু মিলে অর্থনীতি কি বেগবান হচ্ছে নাকি নিম্নমান হচ্ছে? এটা ঢাকায় মার্কেটে  ঘুরলেই বা মিডিয়ায় মধ্যবিত্তের কান্না শুনলেই বুঝা যাবে। আমাদের এখানে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, চাকরি মানুষ হারাচ্ছে। তাই সরকার যতই চেষ্টা করুক আমি বিশ্বাস করিনা ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি বেকারদের চাকরি দেয়া যাবে। আমাদের এখানে বেকার সৃষ্টি হচ্ছে। বিজনেস ইন্ডাস্ট্রি মানুষকে কাজ দিচ্ছে। সেই ইন্ডাস্ট্রিই তো ভেঙে যাচ্ছে। ইম্পোর্টের ক্ষেত্রে আমাদের যেহেতু ডলারের দাম বেড়ে গেছে, ট্যাক্স বেড়ে  গেছে, গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে পারছিনা। তাই পুরো মাত্রায় উৎপাদন করতে পারছেনা। উৎপাদন যদি কমে যায় তারমানে সেই ব্যবস্থার সাথে যারা জড়িত তারা কর্ম হারিয়েছে। সো এটা একটা আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীন দুইটা অর্থনৈতিক চাপের কারণে আমাদের এখানে বেকার সংখ্যা বৃ্দ্ধি পাচ্ছে। 

বাজেটে কর হারের বিষয়ে তিনি বলেন, আইএমএফের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা আমাদের ভঙুর অর্থনীতিতে দুর্ণীতি কমাতে চাচ্ছে। সরকার আরও বড় বাজেট দিতে চেয়েছিলো। আইএমএফের চাপে যেটা পারেনি। এখন কথা হচ্ছে বাজেটের এই টাকারই যোগানের ব্যবস্থা নেই,  যার জন্য সরকার ব্যাংক থেকে লোন নিবে। ব্যাংক থেকে লোন নিলে প্রাইভেট সেক্টর লোন পাবেনা। আবরও শিল্পায়ন সংকুচিত হবে। আমাদের এখানে সবসময় ট্যাক্স ইনজাস্টিজ হয়েছে। ব্যাংকগুলো একদিকে বলতেছে টাকা নেই কিন্তু মালিকদের লাভ বন্টন দেখলে আপনি হকচকিয়ে যাবেন। তারমানে হচ্ছে আপনার শুভঙ্করের ফাঁকি।   এখন এটার কারণ কর্পোরেট ট্যাক্সের তুলনায় ব্যাক্তি ট্যাক্স অনেক বেশি।

এবারও সরকারকে এনবিআর এর উপর নির্ভর করতে হবে। বিদেশি টাকা বেশি পাবেনা। এনবিআর ছাড়া গতি নাই, অর্থাৎ ট্যাক্সের জাল বিচারণ করা। ভ্যাটের ক্ষেত্রে ভ্যাট ইনজাস্টিজ যেটা হচ্ছে এখানে আমরা ভ্যাটকে ক্যাটাগোরাইজড করতে পারি।ধনীরা যেসব জিনিস ব্যবহার করে সেসমস্ত জিনিসের ভ্যাট ১৫-২৫%, মধ্যবিত্তরা ১৫% এবং গরিবের ভ্যাট ১০% এ নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু আমি সেরকম কোন আলামত দেখতেছিনা।  বাজেট গরীববান্ধব হচ্ছেনা। এবার অন্ত্যত সরকার চেষ্টা করেছে যে সোশ্যাল সেফটিনেস টা একই রাখতে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বৃদ্ধি করা উচিৎ ছিল। 

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল