রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাকৃবির ছাত্র হলে সিনিয়র-জুনিয়র সংঘর্ষ ৫ আহত ও ৪ আটক

বৃহস্পতিবার, জুন ৬, ২০২৪
বাকৃবির ছাত্র হলে সিনিয়র-জুনিয়র সংঘর্ষ ৫ আহত ও ৪ আটক

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শহীদ নাজমুল আহসান হলের সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ নাজমুল আহসান হলের ভিতরেই ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জন আহত হয়েছেন এবং হলের নিয়ম-শৃঙখলা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের  লিপ্ত হওয়ার কারণে ৪ জনকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল আলম।

ঘটনা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, শহীদ নাজমুল আহসান হলের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে গেস্টরুমের নামে মারধর করে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। একারণে হলের ওই সিনিয়রদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আজ সন্ধ্যায় হলের সিনিয়রদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েন ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এসময় অন্যান্য হল থেকে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা ওই সমস্যা মেটাতে আসলে তাদের সকলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমন করেন ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ঘটনাটি বিশাল মারামারির আকার ধারণ করে। পরে হলের ভিতরের জানালার কাঁচ ও দরজা ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা।

সসংশ্লিষ্ট অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগের কর্মীদের সাথে ছাত্রলীগের অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলের ছিট সংক্রান্ত কারণে অন্তর্কোন্দলের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি পরে পরে নিজেদের মধ্যে গালাগালি ও কথা কাটাকাটি থেকে এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রুপ নেয়। এসময় লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে নাজমুল আহসান হল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মারামারির সময় হলের বেশ কিছু রুমের জানালা, দরজা ভেঙে ফেলা হয়। মারামারির একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থলে আসলে তাকে উদ্দেশ্যে করেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।  

মারামারিতে ২য়, ৩য় ও ৪র্থ বর্ষের মোট ৫ জন আহত হন। এর মধ্যে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল আলম।

এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ' সন্ধ্যা সাতটার কিছু আগে টিএসসিতে বন্ধুদের সাথে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে নাজমুল আহসান হল থেকে প্রচন্ড হট্টগোল শুনতে পাই। কিছুটা এগিয়ে যেতেই ওই হলের এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হলে তিনি বলেন যে, হলে মারামারি হচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পরেই কয়েকজন শিক্ষার্থীকে প্রাণপণে দৌড়ে যেতে দেখে এবং তাঁদের পিছনে আরো কজনকে ধাওয়া করে যেতে দেখি। ধাওয়াকারীরা রীতিমতো 'ধর ওদের ধর ওদের' বলতে বলতে দৌঁড়াচ্ছিলো। এর কিছুক্ষণ পরেই ওই হল এবং পূবালী ব্যাংক সংলগ্ন সড়ক দিয়ে ১২ থেকে ১৫ টি মোটরসাইকেলকে যেতে দেখি৷ এক একটি মোটরসাইকেলে ২ থেকে ৩ জন করে ছিলো এবং প্রত্যেকের হাতেই বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ( রামদা, ছুরি, হকিস্টিক, ক্রিকেট স্ট্যাম্প, সাইকেলের চেইন ইত্যাদি) ছিলো। মোটরসাইকেলগুলো নিয়ে তাঁরা বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দিয়ে কে আর মার্কেট এবং কৃষি অনুষদের করিডোর হয়ে আব্দুল জব্বার মোড়ের দিকে চলে যায়। '

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য প্রতিষেষক শাখার (হেলথ কেয়ার সেন্টার) ডেপুটি চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থ সেন বলেন, ' আমার কাজ শুরু হয়েছে রাত ৯ টা থেকে। আমার আগে বিকাল ৩ টা থেকে ডিউটিতে ছিলেন ড. মো. সাদিকুল ইসলাম খান। ডা. সাদিকুল ইসলাম আমাকে যতটুকু জানিয়েছেন তাতে আহত অবস্থায় কোনো শিক্ষার্থী হেলথ কেয়ারে আসেন নি। শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে নিজেরাই হয়ত মময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে গিয়েছেন এমনটিই জানিয়েছেন আমাকে ডা. সাদিকুল।'

এবিষয়ে জানার জন্য ডা. সাদিকুল ইসলামের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার বিষয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. আরিফ সাকিল বলেন, ' হলের নিয়ম-শৃঙখলা ভঙ্গ করে বিশৃঙখলা সৃষ্টির কারণে ওই ঘটনার সাথে জড়িত ২য় বর্ষের চারজন শিক্ষার্থীকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করেছেন হল প্রভোস্ট। বর্তমানে তাঁরা কোতোয়ালী থানায় পুলিশের হেফাজতে আছেন। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল আলম বলেন, কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে আমি এখন বলতে পারছি না। আমরা চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে ঘটনার কারণ এবং অন্যান্য বিষয়। আমার জানা মতে এই ঘটনায় পাঁচ জনের মতো আহত হয়েছেন। যার মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং একজন কে ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। চারজন ছাত্রকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দিয়েছি। পরে তাদেরকে কোথায় রাখা হয়েছে এই ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল