মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির নলছিটিতে বরিশাল বিভাগীয় ঔষধ প্রশাসনের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল বারী ১৪টি মডেল মেডিসিন শপ পরিদর্শন করলেন।
গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বেলা ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ফার্মেসীগুলো পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করেন।
ওষুধ প্রশাসন বরিশালের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল বারী দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধির সাথে একান্ত সাক্ষাতে বলেন, নলছিটির ১৪টি মডেল মেডিসিন শপ ইতোমধ্যে প্রস্তুত অবস্থায় আছে। শিগগিরই এ ১৪টি ওষুদের দোকানে মডেল মেডিসিন শপের সনদপত্র প্রদান করা হবে। ইতোমধ্যে রোগীকে কোন ওষুধটি কী পরিমাণ দেওয়া হয়েছে, সেই তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে রেজিষ্টার খাতা কিংবা কম্পিউটারে। পরবর্তীতে ওষুধ শেষ হওয়ার আগেই ওই রোগীকে ফার্মেসি থেকে ফোন করে তা মনে করিয়ে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ১৪টি ফার্মেসি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা না হলেও ইতোমধ্যে এসব দোকানে ওষুধ বেচাকেনা করা হচ্ছে। দোকানে ক্রেতাদের ভালো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। ধীরে ধীরে উপজেলার সব ফার্মেসীকে এই সেবার আওতায় আনা হবে।’
ওষুধ প্রশাসনের নীতিমালা অনুযায়ী, মডেল মেডিসিন শপের আয়তন হতে হবে ১৫০ স্কয়ার বর্গফুট। দুই ক্যাটাগরির ফার্মেসিকেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। মডেল ফার্মেসিতে ‘এ’ গ্রেড (গ্র্যাজুয়েট) আর মডেল মেডিসিন শপে ‘বি’ কিংবা ‘সি’ গ্রেড (ডিপ্লোমা) ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দিতে হবে। ওষুধ নীতিতে অনুমোদিত প্রয়োজনীয় ৩৯টি ওষুধ কেবল বিক্রি করতে পারবেন ফার্মাসিস্টরা। তবে প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ধরনের অ্যান্টি-বায়োটিক বিক্রি করতে পারবে না।’
কোন ওষুধ কখন খেতে হবে, প্রতি ডোজে কী পরিমাণ খেতে হবে, এসব বিষয় নিয়ে আর দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে না রোগী কিংবা তার স্বজনদের। এসব দোকানে গেলেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে দিবেন ফার্মাসিস্টরা। কখন কী ওষুধ খেতে হবে, কী পরিমাণ খেতে হবে, সবই বলে দেবেন তারা। ওষুধ শেষ হওয়ার আগে মোবাইল করে সেটিও জানিয়ে দেবেন, ওষুধ প্রশাসন বরিশাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওষুধ প্রশাসন সূত্র জানায়, ১৪টি মডেল মেডিসিন শপের মধ্যে নলছিটি হাসপাতাল রোডস্থ মেসার্স খান মেডিকেল হল
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. বাদল খান),
হাইস্কুল রোডস্থ মেসার্স পপুলার ড্রাগ হাউজ
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মোহাম্মদ মহসিন),
বাসষ্টান্ডের মেসার্স তানভীর মেডিসিন কর্নার
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ আ্যাডভোকেট এম ইলিয়াস),
পৌরসভা রোডস্থ মেসার্স খান ফার্মেসি
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. আবুল বাসার),
মেসার্স রাশেদ মেডিকেল হল
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. রুহুল আমিন),
হাইস্কুল রোডস্থ মেসার্স প্রাইজ মেডিকেল হল
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. জহিরুল ইসলাম মিন্টু),
মেসার্স বিমলা ফার্মেসী
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ অতুল বাবু),
মেসার্স ইসলামিয়া ফার্মেসী
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. রুবেল হোসেন),
মেসার্স জান্নাত মেডিকেল হল
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ বায়েজিদ বোস্তামী),
মেসার্স মেডিসিন কর্নার
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. সফিকুল ইসলাম ফরিদ),
হাসপাতাল রোডস্থ মেসার্স ইমরান ফার্মেসী
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. আল ওয়ালিদ),
মেসার্স তিথী মেডিসিন কর্নার
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. নুরুজ্জামান ফারূকী),
মেসার্স শেফা ড্রাগ হাউজ
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. শামিম আহম্মেদ),
মেসার্স সিটি ফার্মেসী
(প্রোঃ/ফার্মাসিষ্টঃ মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিপন)।
ওষুধ প্রশাসন বরিশালের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল বারী বলেন, ‘মডেল ফার্মেসি ও মেডিসিন শপে নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রি করার সুযোগ নেই। কারণ যেসব ওষুধ বিক্রি করা হবে, তা তারা তাদের কম্পিউটারে লিপিবদ্ধ করে রাখবেন। আমরা মাঝেমধ্যে গিয়ে তা মনিটরিং করবো।’
ওষুধ প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে প্রায় ৫ হাজারের অধিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত ফার্মেসি আছে। ধীরে ধীরে এসব ফার্মেসিকে মডেল ফার্মেসির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘বিভাগের সকল ফার্মেসীকে এই সেবার আওতায় চলে আসতে হবে। অন্যথায় আমরা ফার্মেসিগুলোর ড্রাগ লাইসেন্স বাতিল করে দিব। মডেল ফার্মেসির সংখ্যা ক্রমান্নয়ে যখন বাড়তে থাকবে, তখন আমরা এই সেবার বাইরে থাকা ওই ফার্মেসিগুলোর ড্রাগ লাইসেন্স বাতিল করে দিবো।’
বরিশাল বিভাগীয় ঔষধ প্রশাসনের সহকারি পরিচালকের পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ (বিএইচবি) প্রকল্পের ট্রেনিং আ্যান্ড এক্রেডিটেশন কোর্ডিনেটর মো. সাইফুল ইসলাম ও ট্রেনিং এক্রেডিটেশন এসোসিয়েট মো. মোখলেছুর রহমান এবং তাদের সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন নলছিটি সরকারি ডিগ্রী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (অবঃ) মো. সামসুল আলম খান বাহার ও উপজেলার বিসিডিএস সভাপতি ডা. মো. ইউসুফ আলী তালুকদার প্রমুখ।
সময় জার্নাল/এলআর