বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

সরকারি চাকুরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবিতে মানববন্ধন

সোমবার, জুন ১০, ২০২৪
সরকারি চাকুরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবিতে মানববন্ধন

বাকৃবি প্রতিনিধি:

সরকারি চাকুরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পুণর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সকল চাকুরিতে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এসময় মানববন্ধনে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সোমবার (৩০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি কোটাবিরোধী স্লোগান দেন। এসময় তারা জানান, দাবি মেনে না নিলে লাগাতার আন্দোলন চলবে।


বিক্ষোভ সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দেশের সরকারের বিরুদ্ধে কোনো সরকার বিরোধী আন্দোলন করছি না। দেশের সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিও রয়েছে আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান এবং আমরা চাই দেশের মুক্তিযোদ্ধারা বরাবর সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা এবং সম্মান নিয়ে এই বাংলার বুকে বেঁচে থাকুক । কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নাম করে তাদের নাতি-নাতনীরা শিক্ষা কিংবা চাকরি ক্ষেত্রে কোটার নামে যেসকল সুবিধা পেয়ে আসছে আমরা সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের এই যুগান্তকারী সময়ে আমরা কোটা বৈষম্যের স্বীকার হতে চাই না।

বাকৃবির মাস্টার্সে অধ্যয়রত শিক্ষার্থী মিশু মোর্শেদ বলেন,আমরা স্বাধীনতার পক্ষে। স্বাধীনতার ৫৩বছর পর এসেও কেনো চাকুরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদেরসহ এত সুযোগ দিতে হবে? তাদেরসহ অন্যদের সুযোগ দিতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ অবহেলিত। সকল শিক্ষার্থীকে তাদের মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হোক।

এসময় আন্দোলনে আসা শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান তানজিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শব্দটাকে বিচ্ছেদ করলে আমরা শুধু মুক্তিই পাই, কোথাও বৈষম্য দেখতে পাই না। স্বাধীনতার এতোগুলো বছর পরে এসেও নতুন করে কোটা বৈষম্য তৈরী করা হলে সেটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথেই সাংঘর্ষিক। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালির যে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটেছিলো আজকে কোটা দিয়ে বৈষম্য তৈরীর মাধ্যমে আমাদের সেই অর্জনকেই মলিন করে দেয়া হয়েছে বলে মনে করি। তাছাড়া আমরা জানি কোটা মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের একটা মাধ্যম। কিন্তু আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন বর্তমানে যারা কোটা সুবিধার আওতাধীন রয়েছে তাদের মধ্যে কেবল প্রতিবন্ধী এবং আদিবাসী ছাড়া কেউই আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আওতায় পড়ে না। সুতরাং এখনই সময় এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। জেলা কোটা এবং পোষ্য কোটা না আব্বু কোটা, এই ধরনের সংক্রামক ব্যাধিকে অতিদ্রুত আমরা বাংলার মাটি থেকে চিরতরে বিদায় জানাতে চাই। বিশেষ বিবেচনায় অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা যেতে পারে তবে সেটা কখনোই ৫% এর বেশি হওয়া উচিত নয়।

আরেক শিক্ষার্থী নূর-ই-হাফিজা বলেন, বাংলাদেশের প্রথম শ্রেনির চাকরি গুলোতে একজন যোগ্য প্রার্থী কে সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ একজন যোগ্য পাবলিক সার্ভেন্ট দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে একজন অযোগ্য মানুষ তা পারবেনা এবং দেশ খুব দ্রুতই ধ্বংস করবে। মেধার যথাযথ সম্মান যে দেশে করা হবে না সে দেশ মেধাশূণ্য হয়ে যাবে অচিরেই। স্বাধীনতার এতবছর পরেও এত বৈষম্য যে আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এর চেয়ে লজ্জাজনক হয়তো আর কিছু হতে পারে না।

আন্দোলনে আসা আরেক শিক্ষার্থী মো. ইরান মিয়া বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসেও সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির পুনর্বহাল বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের সাথে চরম বৈষম্যের প্রতিফলন। ৩০ জুনের মধ্যে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল না করলে সারা বাংলার ছাত্রসমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।তবে প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল