মেহরাজ হোসেন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এরপর দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে নূরানী মাদরাসায় শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। হঠাৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ডান পা কেটে ফেলতে হয়। পঙ্গুত্বকে বরণ করে কামাল উদ্দিন ও তার পরিবারের চরম দুর্দিনের শুরু।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মোল্লা পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের দুর্দশার কথা শুনে পাশে দাড়ালো স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক মোহাম্মদ মহসিন।
জানা গেছে, দুই বছর আগে উপজেলার বড়তাকিয়া বাজারে কামাল উদ্দিনের সাথে পরিচয় হয় স্থানীয় তরুণ সংগঠক মহসিনের । কামালের এমন দুর্দশা দেখে মহসিনের হৃদয়ে পীড়া দেয়। মনে মনে চিন্তার ছক আঁকেন কামাল উদ্দিনের জন্য কিছু করার। যেই ভাবা সেই কাজ। নেমে পড়লেন কামাল উদ্দিনের দিনবদলের কাজে।
বুধবার (১২ জুন) বিকালে উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে নতুন তৈরিকৃত ‘কামালের স্বাবলম্বী স্টোর’ ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন করেন মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন।
এসময় চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন মহসিনের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন,‘এর আগেও মহসিন জনবান্ধব মানবিক কাজ করতে দেখেছি। এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। একজন মানুষকে পুঁিজ দিয়ে দোকান তৈরি করে দেয়া হয়েছে তা সত্যিকার অর্থে ইতিবাচক। এই দোকানের মাধ্যমে কামাল ও তাঁর পরিবার স্বাবলম্বী হতে পারবে।’
দোকান উদ্বোধনের সময় বিকালে বিস্কুট,চিপস, আচারসহ বিভিন্ন সামগ্রী কিনতে ভিড় করছিল গ্রামের লোকজন ও শিশুরা।
উচ্ছ¡সিত কামাল উদ্দিন বলেন,‘ দোকানটি উপহার হিসেবে পেয়ে আমি খুব খুশি। আমার পরিবার নিয়ে চলার মতোন একটা ব্যবস্থা হলো। সাহায্যকারীদের জন্য তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে দোয়া করবো। হাজার গুন শুকরিয়া আল্লাহর দরবারে।’
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও কামালের স্বাবলম্বী স্টোরের উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘কামাল ভাইকে দেখে আমি খুব মর্মাহত হই। স্বাভাবিক জীবন থেকে ছিটকে পড়ে পঙ্গুত্ব জীবনে পদার্পন করেও ভিক্ষা কিংবা মানুষের কাছে হাত পাতার পথ বেছে নেননি। আমি স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজ উদ্যোগে কামাল ভাইকে স্বাবলম্বী করতে দোকান করে দিতে পেরে নিজের আত্মার কাছে তৃপ্ত লাগছে।’
সময় জার্নাল/এলআর