নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষি অর্থনীতিকে উন্নত করে আমরা শিল্পায়নে যাবো। এজন্য ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। এর বাইরে যত্রতত্র জমি নষ্ট করে শিল্প করা যাবে না।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ও ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পটভূমি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখনো কিছু লোকের সেই চেষ্টাটা আছে।
শনিবার (১৫ জুন) গণভবনে কৃষক লীগের উদ্যোগে ৩ মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ-২০২৪ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে, ফসল উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমরা আমাদের ফসল উৎপাদন করবো, যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়। আমাদের খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা ৭৪ সালের। নগদ টাকায় কেনা খাদ্যও কিন্তু আসতে দেয়নি।
কৃত্রিমভাবে সেখানে একটা দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে যেভাবেই হোক মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে। সেটাতেও যখন সফল হয়নি, তারপরই তো ১৫ আগস্ট ঘটালো। এখনো কিছু লোকের সেই চেষ্টাটা আছে।
কৃষিতে ভর্তুকির বিষয়ে তিনি বলেন, সারের দাম আমরা কমিয়ে দিয়েছি। এখনো ব্যাপক পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছি। যেহেতু দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদার বিষয়, সে ক্ষেত্রে আমরা কখনো কার্পণ্য করি না, বাজেটে সব সময় আমরা এখানে ভর্তুকি দেই।
গাছ লাগানোর গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ুর ক্ষতি করে না। কিন্তু জলবায়ু অভিঘাতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। গাছ আমাদের প্রাণ, শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়। ফল ও ঔষধী গাছের উপকারিতা অনেক। এজন্য গাছ লাগাতে হবে। নদীর পাড়, উপকূলে এবং ঘরবাড়িতে গাছ লাগান। তবে ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না।
এসময় যেখানে সেখানে কুরবানি করে জায়গা যেন নোংরা না করে, সেদিকে সবাইকে নজর দিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের এ পর্যন্ত যা যা ওয়াদা ছিল, রক্ষা করেছি। এখন আমাদের এই ব-দ্বীপের জীবন যাতে উন্নত হয়, সে পরিকল্পনা করেছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটার সংশোধন সংযোজন করা যাবে।
মাটির গুণ রক্ষায় পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বারবার একই ফসল করতে করতে মাটির গুণ নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য মাঝখানে আরেকটা করলে মাটি পুষ্টি ফিরে পায়। যেমন- আমরা বারবার ধান করছি, এটার মাঝখানে আরেকটা করতে পারলে মাটির পুষ্টি বাড়বে।
শেখ হাসিনা বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে এত ঝামেলা। আমরা কেন উৎপাদন করি না? ৪০ শতাংশ আমরা যোগান দেই। এটা আরও বাড়বে। পেঁয়াজ উৎপাদন করে কৃষাণী অনেক টাকা আয় করে। ভুট্টাও চাষ হতো না, সেটাও করছি। আগে সবজি শীতকালে পাওয়া যেত, কিন্তু এখন আমরা গবেষণা করে বারোমাসি সবজির জাত উদ্ভাবন করেছি। এখন এটার ফল পাওয়া যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছেন। কৃষিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
কৃষকলীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কৃষকলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটুসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতারা, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও কৃষকলীগের নেতারা অংশ নেন।
সময় জার্নাল/এলআর