সময় জার্নাল ডেস্ক : ৭ মার্চ উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন(ডিএনসিসি) ৫২ ওয়ার্ডের ৭২টি স্থানে একযোগে আতশবাজি উল্লাসের আয়োজন করতে যাচ্ছে। আতসবাজি মারাত্মকভাবে বায়ুদূষণ ঘটায়। আতসবাজি পোড়ানোয় আশপাশের লোকেদের তো বটেই, যিনি পোড়াচ্ছেন তাঁরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমতবস্থায় আতসবাজির আয়োজন বন্ধ করে নতুন কোনো পরিবেশ ও জনবান্ধন পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য আবেদন জানিয়ে খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ (Save Future Bangladesh) সংগঠনের পরিবেশ ও জলবায়ু কর্মীবৃন্দ।
তারিখঃ ০৫/০৩/২০২১
বরাবর
মাননীয় মেয়র
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
বিষয়ঃ ৭ মার্চ উপলক্ষে ৫২ ওয়ার্ডের ৭২টি স্থানে একযোগে আতশবাজি উল্লাসের আয়োজন বন্ধ করে নতুন কোনো পরিবেশ ও জনবান্ধন পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য আবেদন।
জনাব,
যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পুর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, পানি পান না করেও বেশ ক’দিন বেঁচে থাকা যায়; কিন্তু বাতাস ছাড়া তিন মিনিটের বেশি বেঁচে থাকা অসম্ভব। সেই বাতাসই এখন ঢাকায় ভয়াবহ দূষণের শিকার। বায়ুদূষণে এক নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। ইতোমধ্যে বায়ুদূষণের কারণে শহরের সকল স্তরের মানুষেরা ভুগছে। এমতবস্থায় ৭ মার্চ, উপলক্ষে ৫২ ওয়ার্ডের ৭২টি আতসবাজির আয়োজন করা হয়েছে। আতসবাজির আলো দেখতে সুন্দর লাগলেও এর ফলে বায়ুদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। আতসবাজি পোড়ানোয় আশপাশের লোকেদের তো বটেই, যিনি পোড়াচ্ছেন তাঁরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। আতসবাজির ধোঁয়া যে নীরব ঘাতকের মতো নাগরিকদের শ্বাসযন্ত্রে হানা দেয় করোনা ভাইরাসও শ্বাসতন্ত্রকেই আক্রমণ করে, তার ওপর আতসবাজির ধোঁয়ায় বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়লে তা প্রাণঘাতী হতে পারে মানুষের জন্য। এছাড়া আতসবাজি পাখি ও হাসপাতালে অবস্থানরত রোগীদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। বর্তমানে ঢাকায় বাতাসের মান ২০০ যা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। দূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, পরিবেশ এবং সম্পদও নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে জলবায়ুর উপর এবং তা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনেরও কারণ হয়। আর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ গুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। বর্তমানে বাস্তুকণা পিএম ২.৫ শুধুমাত্র ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ থাকে না। তা কোনও ভাবে মস্তিষ্ক বা হৃদ্যন্ত্রে প্রবেশ করে স্ট্রোক এবং হৃদ্রোগের কারণ হতে পারে। অর্থাৎ, আতসবাজি যে শুধুমাত্র শ্বাসনালীর উপরেই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তা-ই নয়, মস্তিষ্ক, হৃদ্যন্ত্র-সহ শরীরের অন্য অঙ্গের উপরেও এর প্রভাব পড়ে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশুরা ও বয়স্কেরা।
অতএব, জনাবের নিকট আমাদের আকুল আবেদন, উপরিউক্ত দিকগুলো বিবেচনা করে ৭ মার্চ, ৫২ ওয়ার্ডে ৭২টি স্থানের আতসবাজির আয়োজন বন্ধ করে নতুন কোনো পরিবেশ ও জনবান্ধন পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।
নিবেদক,
সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ (Save Future Bangladesh) এর পরিবেশ ও জলবায়ু কর্মীবৃন্দ।
সময় জার্নাল/এমআই