ক্যাম্পাস ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের নতুন ছয় শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে হাইকোর্টে রিট করেছেন একই বিভাগের চার শিক্ষক। পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার চার শিক্ষকের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট ড. সৈয়দা নাসরিন।
ড. সৈয়দা নাসরিন বলেন, ‘আদলতে রিট ফাইল হয়েছে। রিট নং- ৫২৯৬। আগামী সপ্তাহ নাগাদ রিটের শুনানি হবে বলে আশা করছি।’
রিটকারী শিক্ষকরা হলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, আবদুছ ছাত্তার ও সহকারী অধ্যাপক জাকির হোসেন।
এ ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন এবং দর্শন বিভাগের সভাপতিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ড. সৈয়দা নাসরিন। দর্শন বিভাগের আটজন শিক্ষকের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি দর্শন বিভাগে ছয়জন প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই ছয় পদের বিপরীতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৫৭ জন প্রার্থী। শনিবার অনলাইনে তাদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর নিয়োগ বন্ধে লিখিত আবেদন করেন ওই আট শিক্ষক।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগীয় শিক্ষা পর্ষদের সভা আহ্বানের ‘নীতি লঙ্ঘন’ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিভাগের সভাপতি তার ‘পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ’ দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিভাগীয় নীতি লঙ্ঘন করেছেন।
আবেদনে আরো বলা হয়, এক বছরের বেশি সময় ধরে সরাসরি ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। নানা কারণে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের বাইরে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে ছয়জন শিক্ষক নিয়োগ শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয় বরং দূরভিসন্ধিমূলক।
এ সব বিষয়ে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। এভাবে শিক্ষক নিয়োগের ঘটনা বিভাগে নজিরবিহীন। অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কোন নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। এ ছাড়া প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে অনলাইনে পরীক্ষার বিষয়টি উল্লেখ নেই। এ রকম অস্পষ্টতার মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ হতে পারে না।’
অভিযোগের বিষয়ে দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা নাজমুল মানছুর বলেন, ‘২০১১ সালের পর থেকে বিভাগে কোনো শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন অবসরে এবং শিক্ষা ছুটিতে গিয়েছেন। ফলে বর্তমান কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ১৭ জন। এই সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে পাঠদান সম্ভব নয় বলেই নতুন করে চাহিদার কথা জানানো হয়।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা কানিজকে ফোনে কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিভাগটিতে এখন দুইটি পক্ষ আছে। আমার জন্য এখানে বিষয়টিতে পক্ষ-বিপক্ষ নেয়া খুব কঠিন। আর বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ডিনের কোনো ভূমিকা থাকে না। যেহেতু বিষয়টি প্রশাসনিক, প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।’
সময় জার্নাল আরইউ