ইবি প্রতিনিধি:
২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল ও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।
শনিবার (৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত তৃতীয় দিনের কর্মসূচি চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গনে এসে তিনি একাত্মতা পোষণ করেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে বলেন।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরাও করতালির মাধ্যমে তাকে সাধুবাদ জানান। শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রক্টর স্যার আমাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছেন। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। যেহেতু আমাদের শিক্ষকরা আমাদের সাথে আছেন, আমাদের বিশ্বাস আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হবে।
এ বিষয়ে প্রক্টর বলেন, এটা যেহেতেু শিক্ষার্থীদের চাকরির বিষয়, তারা যাতে চাকরিতে বেশি সুযোগ-সুবিধা পায় তাই তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছি। আমাদের সময় আমি বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলাম। কিন্তু কোটার কারণে দেখা গেল আমার চেয়ে কম নম্বর পেয়েও আমার বন্ধুরা ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে গেল। তাই আমরাও চাই শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন হোক। তবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে যা যা করা যায় সেটাই করতে হবে।
পরে প্রক্টর চলে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে পদযাত্রা বের করে। এটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক হয়ে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজার প্রদক্ষিণ করে। পরে ১২টার দিকে প্রধান ফটকের সামনে এসে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এসময় মুষলধারে বৃষ্টি হলেও আন্দোলনকারীরা সড়ক ছাড়েননি। এদিকে অবরোধের প্রায় আধাঘন্টা পর সড়ক থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘স্বাধীন এই বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না, মানবো না’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা পদ্ধতি নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’,‘১৮ সালের পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘কোটা প্রথায় নিয়োগ পেলে, দুর্নীতি বাড়ে প্রশাসনে’সহ নানা স্লোগান দেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটাপ্রথা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। সাংবিধানিকভাবে এটি শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। কোটাপ্রথার মাধ্যমে আমাদের অধিকারের উপর লাথি মারা হচ্ছে। এই আন্দোলন আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আমরা বাতিল নয়, সংস্কারের পক্ষে দাড়িয়েছি। আর কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত চাই না। যতক্ষণ পর্যন্ত হাইকোর্ট থেকে একটি সন্তোষজনক সমাধান না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এর আগে গত ২ ও ৪ জুলাই কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও ছাত্র সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
এমআই