রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সরকারি সার-বীজ বিএনপি-জামায়াত পাবে না, ঘোষণা ভাইস-চেয়ারম্যানের

শনিবার, জুলাই ৬, ২০২৪
সরকারি সার-বীজ বিএনপি-জামায়াত পাবে না, ঘোষণা ভাইস-চেয়ারম্যানের

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের জন্য। নির্দিষ্ট কোন দল বা গোষ্ঠীর জন্য নয়। অথচ উচ্চ ফলনশীল এসব বীজ ও সার আওয়ামী লীগের কর্মী ব্যতিত অন্যদের বিতরণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের এক ভাইস চেয়ারম্যান। অভিযোগ উঠেছে ভুক্তভোগী কৃষকদের ‘বিএনপি-জামায়াত’ কর্মী আখ্যা দিয়ে প্রণোদনা প্রাপ্তির কার্ড রেখে দেন ওই ভাইস চেয়ারম্যান। অভিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের  পাটোয়ারী।

ভুক্তভোগী কৃষক একই উপজেলার হাজীরপাড়া ইউনিয়নের চর মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মনির হোসেন। অপর কৃষক একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে আবু ছিদ্দিক।

জানা গেছে, সদর উপজেলার ৬ হাজার ৫৯ জন কৃষককের মধ্যে আমন চাষে প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এতে প্রত্যেক কৃষককে প্রতি বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি উচ্চ ফলনশীল আমন বীজ, ১০ কেজি ডিএমপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদান করবেন।

প্রণোদনা বিতরণের কার্যক্রম শনিবার (৬ জুলাই) সকালে সাড়ে ১১ টায় উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ গোলাম ফারুক পিংকু। এরপর থেকে প্রণোদনা প্রাপ্তি কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। তবে উদ্বোধন পরবর্তী ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ পাটোয়ারী ও তাঁর সহযোগী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. আলম আওয়ামী লীগ কর্মী ব্যতিত অন্যদের সার-বীজ না দেওয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি দুইজন কৃষকের প্রণোদনা প্রাপ্তি কার্ড রেখে দেন তারা। বিষয়টি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সামনে ঘটলেও তারা কোন প্রতিবাদ করেননি। তবে পরবর্তীতে ঘটনাস্থল (উপজেলা চত্তর) থেকে ওই ভাইস চেয়ারম্যান চলে গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির (মেম্বার) হস্তক্ষেপে প্রণোদনা উপকরণ পায় কৃষকরা।

ভুক্তভোগী কৃষক মনির হোসেন বলেন, আমি কৃষি কাজ করি। আমার বাবা ও দাদারা একই কাজ করেছেন। কৃষক হওয়ায় আমন চাষে প্রণোদনা প্রাপ্তির কার্ড পেয়েছি। আজ উপজেলায় সার-বীজ নিতে আসলে আমাদের কার্ডগুলো ভাইস চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগী রেখে দেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যদের সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সার-বীজ দেওয়া হবে না।

অপর কৃষক আবু ছিদ্দিক বলেন, আজ সকালে সার-বীজ নেওয়ার জন্য উপজেলায় মেম্বারের দেওয়া কার্ড নিয়ে এসেছি। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগী আমাদের কার্ড আটকিয়ে রাখছে। আমরা নাকি বিএনপি-জামায়াতের লোক। এজন্য আমাদের সরকারী সার-বীজ দেওয়া হবে না। অথচ আমরাও আওয়ামী লীগ করি। সদর আসনের এমপির বাড়ির পাশে আমাদের বাড়ি। তিনি মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের কার্ডগুলো দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ পাটোয়ারী বলেন, ফেসবুকে দেখলাম একজন ব্যক্তি একাধিক কৃষকের স্বাক্ষর দিয়ে সার ও বীজ নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনা জানতে চেয়েছি ও সতর্ক করেছি কৃষি কর্মকর্তাদের। যাতে ভবিষ্যতে অনিয়মটি না হয়। কারন, প্রকৃত কৃষকের হাতে প্রণোদনা পৌঁছে দেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। ভুয়া তালিকা দেখিয়ে লুট করার কোন সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, সরকার কৃষি বান্ধব বলে বিনামূল্যে সার ও বীজ দিচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত কৃষক যদি ওই সুবিধা না পায় তাহলে সরকারের পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। আমরা আওয়ামী লীগের কর্মী ও জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব হচ্ছে কৃষি খাতে সরকারের সুবিধাগুলো প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের মধ্যে বিতরণের তদারকি রাখা। আজও সেটি করেছিলাম। কিন্তু কেউ কেউ এটাকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান ইমাম বলেন, আমন চাষে সরকার প্রণোদনা দিয়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে বিতরণ করার জন্য। নির্দিষ্ট কোন দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে বন্টনের জন্য নয়। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কেন ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঘটনা পরবর্তী ভুক্তভোগী কৃষকদের সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল