সিকৃবি প্রতিনিধি:
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের আন্দোলনে অচলাবস্থা চলছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে ০৭ জুলাই রবিবার সপ্তম দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তিকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মবিরতি পালন অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার পরিষদের উদ্যোগে প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। অফিসার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. আফরাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মোহাম্মদ ছায়াদ মিয়ার সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে অফিসার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অপর দিকে সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারী পরিষদের উদ্যোগে সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান এর সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মোঃ শরীফ হোসেন ভূইয়ার সভাপতিত্বে বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসির সম্মুখে কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘প্রত্যয়’ স্কিম ঘোষণার পর থেকেই ক্ষুদ্ধ পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ৩৫টি পাবালিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই স্কিম বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহবানে একই দাবিতে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন কর্মকর্তরা। অপর দিকে বাংলাদেশ আন্তঃ বিশ^বিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহবানে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে কর্মচারীরা। ফলে অচলাবস্থা বিরাজ করছে সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে। এতে সেশনজটের আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা। যদিও শিক্ষক কর্মকর্তারা বলছেন পরবর্তীতে বিশেষ ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন শিক্ষা হচ্ছে জাতির মেরুদ-। তাই মেরুদ-কে শক্ত করতে হলে, টেকসই ও মজবুত করতে হলে, শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। এবং যারা এই শিক্ষাদাতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সব স্তরের শিক্ষকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। একটি স্বতন্ত্র পে-স্কেল থাকলে জাতির মেধাবী সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আগ্রহী হয়ে উঠবে। সরকারি কর্মকর্তাদের আমরা বিশ্বাস করি না। ২০১৫ সালে যেভাবে তারা আমাদের রাস্তায় নামিয়েছে। সুপার গ্রেড আমাদের দেয়নি। সেসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, একটি কমিটিও হয়েছে। তবে নয় বছরেও আমরা সুপার গ্রেড পাইনি। তখনও আশ্বাস দিয়েছে। সুতরাং আশ্বাস দিলে হবে না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নিয়ে বসতে হবে। আমাদের সুপার গ্রেড দিতেই হবে।
অফিসার পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ ছায়াদ মিয়া বলেন বিদ্যমান পেনশন স্কিমের অধীনে যারা একই সুবিধাদি পেতেন নতুন স্কিমে তাদের একই স্কিমের অন্তর্ভূক্ত করা হলে সেটি নিয়ে বৈষম্যের কথা উঠতো না। এটি বৈষম্যমূলক ও দুরভিসন্ধিমূলক। এসময় তিনি অবিলম্বে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবী জানান।
সময় জার্নাল/এলআর